GDPR সম্মতি

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করার জন্য আমরা কুকি এবং আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করি। আপনার সম্মতি থাকলে আমরা এই তথ্যগুলি সংগ্রহ করতে পারি। আপনি চাইলে আপনার সম্মতি দিতে পারেন অথবা নীচের পছন্দগুলি পরিবর্তন করতে পারেন। সম্মতি দিন | পছন্দ পরিবর্তন করুন

মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

কষ্টের পথ ও মর্মান্তিক পরিণতি: আল্লাহর রহমত ও ধৈর্যের ফল"

 গল্প: "কষ্টের পথ এবং এর করুন পরিণতি"

একটি ছেলে তার জীবনপ্রাপ্ত ভালোবাসা হারিয়ে কষ্ট পায়। মেয়েটি খারাপ সিদ্ধান্ত নিয়ে তার জীবন ধ্বংস করে, কিন্তু ধৈর্য ধারণের মাধ্যমে আল্লাহ তাকে পুরস্কৃত করেন। গল্পটি মর্মান্তিক পরিণতি এবং আল্লাহর রহমত ও দয়া সম্পর্কে।"
কষ্টের পরিণতি এবং আল্লাহর রহমত—একটি মর্মান্তিক গল্পের চিত্র"

ফরহাদের জীবনে একসময় ছিল শান্তি, ছিল সুখ। সে তার প্রিয় মেয়েটি, মুক্তা, কে বিয়ে করেছিল, কিন্তু কিছু দিন পর মেয়েটি তার সাথে অস্থির এবং একেবারে অমনের আচরণ শুরু করেছিল। একে একে মেয়েটির মন বদলে গিয়েছিল, এবং ফরহাদকে কষ্ট দিতে দিতে একদিন সে তাকে ছেড়ে চলে যায়।

এটি ছিল ফরহাদের জীবনের সবচেয়ে বড় ধাক্কা। সে একাকী, ক্ষুব্ধ, এবং বিষণ্ন হয়ে পড়েছিল। তার মনে একটাই চিন্তা ঘুরতো—এত কষ্টের পরেও কেন আল্লাহ তাকে একা রেখে গেল? দিনরাত সে মাঠে, বনে, জঙ্গলে ঘুরে বেড়াত, কাঁদত। কখনো ভাবত আত্মহত্যার বিষয়ে, কিন্তু কিছুতেই শান্তি পেত না। মনের ভেতর এক দুঃস্বপ্নের মত অনুভূতি তাকে গ্রাস করেছিল।

মুক্তা, যিনি একসময় তার সুখের কারণ ছিল, তার জীবনের সমস্ত স্বপ্ন শেষ করে চলে গিয়েছিল। তবে তার জীবন যে কখনো শান্তি পাবে না, সেটি সে জানত না। এক সময়, মুক্তা অন্য একটি ছেলে সাব্বিরকে বিয়ে করল, যিনি ছিল অত্যন্ত খারাপ স্বভাবের। এই ছেলেটি ছিল এক ভয়ানক মাদকাসক্ত, যার চরিত্র ছিল একদম নিষ্ঠুর। মেয়েটি, যাকে একসময় আল্লাহর রহমতের ছায়ায় সংসার করার স্বপ্ন দেখিয়েছিল, তাকে এই নিষ্ঠুর স্বামীর দখলে পড়ে অসহ্য কষ্টের মধ্যে দিন কাটাতে হল।

প্রথমে, মুক্তা বুঝতে পারেনি, কিন্তু কিছুদিন পর সে জানল যে, এই নতুন স্বামী সাব্বির একবার  নয়, তিনবার বিয়ে করেছিল এবং তার আগের স্ত্রীরা তার অত্যাচারে চলে গিয়েছিল। এই স্বামী ছিল মাদকাসক্ত, তাকে ঘিরে ছিল মারধর, তিক্ততা, আর নিপীড়ন। মুক্তার জীবনও যে কতটা ধ্বংস হতে চলেছে, সে তা অনুভব করতে শুরু করল, কিন্তু তখন আর কোনো পথ ছিল না। তার নতুন সংসার, যা সে ভেবেছিল সুখী হবে, তাও অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে গেল।

এদিকে, ফরহাদের জীবনে আল্লাহর রহমত আসতে দেরি হয়নি। আল্লাহ তার ধৈর্য্যের ফলস্বরূপ তাকে পুরস্কৃত করলেন। তিনি তার জীবনে শান্তি ফিরিয়ে আনলেন এবং ফরহাদ আবার নতুন করে জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পেলেন। কিন্তু মুক্তার জন্য সেই পুরস্কার আসল না। তার দুনিয়া একেবারে অন্ধকারে ডুবে গেল।

কোরআনে আল্লাহ বলেন, "وَمَن يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَلْ لَهُ مَخْرَجًا" — "আর যে আল্লাহকে ভয় করবে, আল্লাহ তাকে সর্বোত্তম পথ দেখাবেন।" (সূরা তালাক, 65:2)

এছাড়া, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি অন্যকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তার প্রতি কষ্ট আনেন।" (সহীহ মুসলিম)

মুক্তার জিবন ছিল একসময় আলো, কিন্তু তার শয়তানি ও কষ্ট দেওয়ার কারণে সে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আল্লাহ তাকে সে কষ্টের পরিণতি দিয়েছেন, কারণ সে কাউকে কষ্ট দিয়েছিল। মেয়েটির দুঃখের কথা, তার নতুন স্বামী, সব কিছুই একে একে মর্মান্তিক পরিণতির দিকে নিয়ে গেল।

এদিকে, ফরহাদ, যিনি ধৈর্য ধারণ করে আল্লাহর প্রতি আস্থা রেখেছিল, তার জীবন ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধার হল এবং আল্লাহ তাকে শান্তি, সুখ, এবং সফলতা দান করলেন।

"إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ" — "নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।" (সূরা আল-বাকারাহ, 2:153)

লেখক মাওলানা মোঃ সাকিব 


এখন, এই গল্পের মর্মার্থ হল, আমাদের কষ্টের পরও আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখলে, এবং মানুষকে কষ্ট না দিয়ে সহানুভূতিপূর্ণ জীবন কাটালে, আল্লাহ আমাদেরকে সর্বোত্তম পুরস্কার দিবেন।


লেখক: মাওলানা মোঃ সাকিব 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। অনুগ্রহ করে শালীন ভাষায় কমেন্ট করুন।"