GDPR সম্মতি

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করার জন্য আমরা কুকি এবং আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করি। আপনার সম্মতি থাকলে আমরা এই তথ্যগুলি সংগ্রহ করতে পারি। আপনি চাইলে আপনার সম্মতি দিতে পারেন অথবা নীচের পছন্দগুলি পরিবর্তন করতে পারেন। সম্মতি দিন | পছন্দ পরিবর্তন করুন

বুধবার, ২২ জানুয়ারী, ২০২৫

"পরকীয়ার অন্ধকারে আলোর পথ: ইসলামic দৃষ্টিকোণ ও অনুশোচনার গল্প"

 সমাজে পরকীয়ার প্রভাব: নৈতিক অবক্ষয় এবং এর সমাধান

"ইসলামে পরকীয়ার ভয়াবহতা ও সমাধান: হৃদয়স্পর্শী অনুশোচনার গল্প"
পরকীয়া থেকে ফিরে আসার অনুশোচনা এবং ইসলামের পথে নতুন জীবনের শুরু।"

পরকীয়া, যা দাম্পত্য জীবনের বিশ্বাসঘাতকতার সমার্থক, সমাজে এক গভীর নৈতিক সংকটের জন্ম দেয়। ইসলামে এই আচরণ অত্যন্ত কঠোরভাবে নিন্দিত এবং নিষিদ্ধ। এটি কেবল ব্যক্তি ও পরিবারের মাঝে অশান্তি সৃষ্টি করে না, বরং সমাজেও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। নিচে একটি গল্পের মাধ্যমে কুরআন-হাদিসের আলোকে পরকীয়ার ভয়াবহ পরিণতি ও সমাধান তুলে ধরা হলো।


গল্প: আফসোসের কান্না


গ্রামের নাম নদিয়া পাড়া। সেখানকার একটি সুখী দম্পতি, আরিয়ান ও সামিহার গল্প এটি। তারা একে অপরকে খুব ভালোবাসত। তাদের ছোট মেয়ে লাবিবা ছিল পরিবারের সোনালি আলো। আরিয়ান ছিল একজন ধার্মিক মানুষ, নিয়মিত সালাত আদায় করত। স্ত্রী-সন্তানের জন্য তার ভালোবাসা ছিল উদাহরণস্বরূপ।


কিন্তু হঠাৎ করেই এই পরিবারে কালো মেঘ জমে উঠল। একদিন সামিহা জানতে পারে, আরিয়ান তার অফিসের এক সহকর্মী নারী হাবিবার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। এই খবর সামিহার মন ভেঙে দেয়। সে আরিয়ানকে জিজ্ঞাসা করলে আরিয়ান প্রথমে অস্বীকার করে, পরে কাঁদতে কাঁদতে তার ভুল স্বীকার করে।


সামিহা রাতে নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করল। সকালে সে আরিয়ানকে বলল, "আল্লাহ আমাদের জন্য যা নির্দেশ দিয়েছেন, তা মানলে আজ আমরা এই অবস্থায় থাকতাম না।"


ইসলামের দৃষ্টিতে পরকীয়া


কুরআন থেকে নির্দেশ:

আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন,

"তোমরা ব্যভিচারের কাছে যেও না। নিশ্চয় এটি অশ্লীল কাজ এবং একটি নিকৃষ্ট পথ।"

(সুরা ইসরা: ৩২)


এ থেকে বোঝা যায়, পরকীয়া শুধু অন্যায় নয়, এটি একটি ভয়াবহ পাপ, যা পরিবার ও সমাজকে ধ্বংস করে দেয়।


হাদিস থেকে শিক্ষা:

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:

"মুমিন কখনো ব্যভিচার করতে পারে না, যখন সে মুমিন থাকে।"

(বুখারি ও মুসলিম)


পরিণতি ও সমাধান


আরিয়ান তার ভুল বুঝতে পেরে কান্নায় ভেঙে পড়ে। সে সামিহার কাছে ক্ষমা চায় এবং প্রতিজ্ঞা করে, এই পাপ থেকে সে ফিরে আসবে। সে পরিপূর্ণ তওবা করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়।

তওবার শর্তগুলো হলো:

1. পাপ কাজ ছেড়ে দেওয়া।

2. পাপের জন্য অনুশোচনা করা।

3. পুণরায় সেই পাপে ফিরে না যাওয়ার দৃঢ় সংকল্প করা।

আরিয়ান এবং সামিহা দুজন মিলে পরিবারকে নতুন করে সাজায়। তারা কুরআন-হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী জীবনযাপন শুরু করে।

শিক্ষা

এই গল্পটি আমাদের শিখায়, পরকীয়ার মাধ্যমে শুধু ব্যক্তিগত জীবনে নয়, পুরো সমাজে নৈতিক অবক্ষয় ঘটে। ইসলামের নির্দেশনা মেনে চললে আমরা এসব সমস্যা এড়াতে পারি।

আল্লাহ বলেন:

"আর যারা তওবা করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, আল্লাহ তাদের পাপকে পুণ্যে পরিণত করবেন।"

(সুরা ফুরকান: ৭০)


সুতরাং, তওবা এবং আল্লাহর পথে ফিরে আসাই এই সংকটের একমাত্র সমাধান।

লেখক মাওলানা মোঃ সাকিব 

"ভালোবাসার বেড়াজাল: পরকীয়ার ফাঁদে একটি সংসারের ধ্বংসগাথা"


 গল্প: একটি ধ্বংসস্তূপের গল্প

"পরকীয়ার কারণে একটি সুখী সংসারের ধ্বংস এবং কোরআন-হাদিসের আলোকে এর করুণ পরিণতি নিয়ে লেখা একটি শিক্ষামূলক গল্প।
"পরকীয়ার মর্মান্তিক পরিণতি—একটি সুখী সংসার কীভাবে ধ্বংস হয় কোরআন-হাদিসের আলোকে তার বাস্তব চিত্র।"

ভূমিকা


শফিক ও জামিলার সংসারটি ছিল আশেপাশের সবার জন্য এক উদাহরণ। তাদের দুই সন্তান,মেহেদী ও রুকাইয়া, যেন তাদের ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি। কিন্তু এই সুখী সংসারটি একটি অন্ধকার পথের দিকে ধাবিত হলো যখন পরকীয়ার বিষ তাদের জীবনে প্রবেশ করল।


শুরুর গল্প


সফিক একজন সফল ব্যবসায়ী। ব্যস্ত জীবনের কারণে সে ধীরে ধীরে জামিলাকে সময় দিতে ব্যর্থ হয়। এদিকে জামিলা তার এক পুরনো কলেজ বন্ধু রাসেলের সঙ্গে ফেসবুকে যোগাযোগ স্থাপন করে। প্রথমে তাদের আলাপচারিতা ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ, কিন্তু ধীরে ধীরে এটি পরকীয়ার দিকে মোড় নেয়।


রাসেল তাকে মনে করিয়ে দেয় পুরনো স্মৃতিগুলো। তার মিষ্টি কথায় জামিলা নিজের বিবাহিত জীবনের সীমা ভুলে যায়। এক সময় তাদের মেসেজ বিনিময় গভীর হয়ে যায় এবং তাদের সম্পর্কটি গোপনীয় একটি স্তরে পৌঁছায়।


পরিণতি


একদিন সফিক তাদের কথোপকথনের স্ক্রিনশট দেখে ফেলে। তার হৃদয় ভেঙে যায়। সে জামিলাকে জিজ্ঞাসা করলে জামিলা প্রথমে অস্বীকার করে, কিন্তু সফিকের সামনে প্রমাণ থাকায় অবশেষে সত্য মেনে নেয়।


সফিক তখন কোরআনের একটি আয়াত স্মরণ করল:

"আর ব্যভিচারের নিকটেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটি অশ্লীল কাজ এবং খুবই খারাপ পথ।"

(সুরা আল-ইসরা: ৩২)


সফিক তাকে বোঝানোর চেষ্টা করে যে তারা ভুল পথ থেকে ফিরে আসতে পারে। কিন্তু জামিলা ততদিনে রাসেলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছিল। সফিক এক পর্যায়ে জামিলাকে তালাক দিতে বাধ্য হয়।


শেষ দৃশ্য


জামিলা যখন রাসেলের সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করার স্বপ্ন দেখছিল, তখন সে আবিষ্কার করল যে রাসেল কখনোই তাকে বিয়ে করার পরিকল্পনা করেনি। সে শুধু তার সঙ্গে খেলেছে। বিধ্বস্ত জামিলা তখন বুঝতে পারে তার সংসার ও সন্তানদের সে চিরদিনের জন্য হারিয়েছে।


জামিলা তার সন্তানদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একাকীত্বে ভুগতে থাকে। তার কাছে কোরআনের আরেকটি আয়াত ধ্বনিত হয়:

"যে নারী কিংবা পুরুষ মন্দ কাজ করে, সে তার সমান শাস্তি পাবে এবং যেই সৎকর্ম করে, সে পুরস্কৃত হবে।"

(সুরা আন-নিসা: ১২৪)


উপসংহার


এটি শুধুমাত্র জামিলার গল্প নয়, বরং এটি একটি শিক্ষা। পরকীয়ার শুরুর পেছনে হয়তো সাময়িক তৃপ্তি থাকতে পারে, কিন্তু এর শেষ ফলাফল সবসময়ই ধ্বংস। যারা আল্লাহর সীমা লঙ্ঘন করে, তারা দুনিয়া ও আখিরাতে আফসোস করবে।


পাঠকদের চোখে পানি এনে দেয়ার মতো এই গল্পটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়:


"তোমরা তাওবা করো এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও। আল্লাহ ক্ষমাশীল এবং পরম দয়ালু।"

(সুরা আল-বাকারা: ৩৭)


শিক্ষা


এই গল্পের মাধ্যমে পাঠকদের জন্য বার্তা হল: যেকোনো সম্পর্ককে হালকা করে দেখা উচিত নয়। একটি মুহূর্তের ভুল একটি পরিবারের শান্তি ধ্বংস করতে পারে। তাই নিজেদের চরিত্র রক্ষায় সচেতন হওয়া এবং আল্লাহর সীমা অতিক্রম না করার বিষয়ে সতর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।

লেখক মাওলানা মোঃ ছাকিব 

সোমবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২৫

খালিদের তাওবা: আদিবার ধৈর্যের জয়


"বিচ্ছেদের আঘাতে শিক্ষা"

খালিদ ও আদিবার জীবনের সংগ্রাম আমাদের শিখিয়েছে, তাওবা ও ধৈর্যের মাধ্যমে সম্পর্কের পুনর্নির্মাণ সম্ভব।"
খালিদ ও আদিবার জীবনের সংগ্রাম আমাদের শিখিয়েছে, তাওবা ও ধৈর্যের মাধ্যমে সম্পর্কের পুনর্নির্মাণ সম্ভব।"


পটভূমি:

উপন্যাসটি গড়ে উঠবে দুটি পরিবারকে কেন্দ্র করে। মূল চরিত্রগুলো হলো খালিদ এবং আদিবা। খালিদ  একজন ব্যবসায়ী এবং আদিবা তার স্ত্রী। তাদের সুখের সংসার ধ্বংস হয়ে যায় যখন আদিবা জানতে পারে, খালিদ একজন সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন।


চরিত্রাবলী:


1. খালিদ: সফল ব্যবসায়ী, কিন্তু জীবনের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ঈমানি দুর্বলতার শিকার হন।



2. আদিবা: খালিদের স্ত্রী, আল্লাহভীরু এবং ধৈর্যশীল নারী।



3. সাবিনা: আরিফের সহকর্মী, যার সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক হয়।



4. মুফতি ওবায়দুল্লাহ: একজন আলেম, যিনি উপন্যাসের শেষভাগে শিক্ষা ও সমাধান নিয়ে আসবেন।


কাহিনী সংক্ষেপ:


প্রথম অংশ:

খালিদ ও আদিবার সুখের সংসারের বর্ণনা দিয়ে কাহিনী শুরু হয়। তারা দু’জনেই দাম্পত্য জীবনে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ। কিন্তু খালিদ তার অফিসের সহকর্মী সাবিনার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন। ধীরে ধীরে আদিবা খালিদের পরিবর্তন টের পায় এবং সন্দেহের সূচনা হয়।


দ্বিতীয় অংশ:

একদিন আদিবা খালিদের মোবাইলে একটি বার্তা দেখে পুরো ব্যাপারটি জানতে পারেন। আদিবা ভীষণভাবে ভেঙে পড়েন এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। কোরআনের একটি আয়াত তার মানসিক শক্তি জোগায়:

“আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয়ই এটি অশ্লীল এবং নিকৃষ্ট আচরণ।”

(সুরা আল-ইসরা, আয়াত ৩২)


আদিবা তার শ্বশুরবাড়ির সাহায্য চায়, কিন্তু তারা সমস্যার সমাধানে ব্যর্থ হয়।


তৃতীয় অংশ:

আদিবা আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে ধৈর্য ধারণ করেন। মুফতি ওবায়দুল্লাহ কাছে যান এবং তার সমস্যার কথা বলেন। মুফতি ওবায়দুল্লাহ সাবধান করেন যে, "যে ব্যক্তি তার স্ত্রী বা স্বামীর অধিকার লঙ্ঘন করে এবং হারাম সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে, তাকে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে।"


তিনি নবী (সা.)-এর হাদিস উল্লেখ করেন:

“কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে সবচেয়ে অপছন্দনীয় হালাল হলো তালাক।”

(সুনান আবু দাউদ, হাদিস: ২১৭৮)


চতুর্থ অংশ:

খালিদ একদিন বুঝতে পারেন, তার এই সম্পর্ক তাকে শান্তি দিতে পারছে না। সাবিনা তাকে ছেড়ে চলে যায় এবং তার কর্মক্ষেত্রে বদনাম হয়। তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং আদিবার কাছে ফিরে যেতে চান।


শেষ অংশ:

আদিবা সিদ্ধান্ত নেন যে খালিদকে একটি সুযোগ দেবেন, কারণ তিনি তাওবা করে আল্লাহর পথে ফিরে এসেছেন। তিনি বলেন:

“তোমরা যদি আল্লাহর পথে ফিরে আসো, তাহলে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ অতিশয় দয়ালু ও পরম ক্ষমাশীল।”

(সুরা আন-নিসা, আয়াত ১১০)


তারা নতুন করে জীবন শুরু করেন, এবং খালিদ তার ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে পরিবারকে সময় দিতে শুরু করেন।


উপন্যাসের শিক্ষা:

1. হারাম সম্পর্কে জড়ানো কীভাবে দাম্পত্য জীবন ধ্বংস করে।

2. কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী পরকীয়া ও এর শাস্তি।

3. তাওবার গুরুত্ব এবং আল্লাহর কাছে ফিরে আসার পথ।

4. ইসলামে বিবাহবিচ্ছেদের অপছন্দনীয়তা এবং সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা।


লেখক: মাওলানা মোঃ সাকিব