✨ ১৫ নম্বর খন্ড প্রথম অংশ : সময়ের পার্থক্য ও ইসলামের নির্ভুল অবস্থান
 |
🕌 নাস্তিক বনাম আলেম: নবীজির বিয়ে ও বাল্যবিবাহ নিয়ে তর্ক, যুক্তি ও সত্যের বিজয় |
|
মঞ্চ এখনো স্তব্ধ, কিন্তু উত্তেজনায় ফেটে পড়ার মতো অবস্থা।
কুখ্যাত নাস্তিক আসাদ নূর পুনরায় কথা তোলে:
🗣️ নাস্তিক আসাদ নুর:
“আচ্ছা হুজুর, যদি সব কিছু সময়ের প্রেক্ষিতে বিচার করা হয়—তাহলে কি আজকের যুগে শিশুদের বিয়ে জায়েজ? যদি এখন না হয়, তাহলে তখন কিভাবে হয়? আপনি বলছেন নবীজি সময় অনুযায়ী করেছেন। তাহলে শরিয়ত কি সময়ভেদে বদলায়? এটা কি দ্বিমুখিতা না?”
💬 মুফতি খাইরুল ইসলাম নোমানী (চোখে তেজ, কণ্ঠে শান্ত ভরসা):
“তুমি খুব ধূর্তভাবে প্রশ্ন করছো, কিন্তু ইসলাম অত্যন্ত স্পষ্ট ও পূর্ণাঙ্গ। একে ‘ধর্ম’ বললেও কম বলা হয়, বরং এটি একটি পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা।
📌 প্রথমে একটি আয়াত মনে করিয়ে দিই:
> ٱلۡيَوۡمَ أَكۡمَلۡتُ لَكُمۡ دِينَكُمۡ وَأَتۡمَمۡتُ عَلَيۡكُمۡ نِعۡمَتِي
“আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করলাম, এবং আমার নেয়ামত তোমাদের উপর পরিপূর্ণ করলাম।”
— (সূরা আল-মায়িদা: ৩)
অতএব, শরিয়ত অপরিবর্তনীয় — কিন্তু শরিয়তের কিছু ব্যবস্থা সময় ও প্রেক্ষাপটভেদে ভিন্ন রূপে প্রযোজ্য হয়, ঠিক যেমন:
আজকের দিনে কেউ পথচারীকে উটের পিঠে উঠিয়ে নিতে হয় না, এখন গাড়ি আছে। কিন্তু আতিথেয়তা এখনো ফরজ। বাহন বদলেছে, নীতিমালা নয়।
🧠 আলেম বলেন (দর্শকদের দিকে তাকিয়ে):
“শোনো, সমাজের প্রেক্ষাপট বদলায়, মানুষের জীবনচর্যা বদলায়, কিন্তু ইসলামের মূলনীতি কখনো বদলায় না।
নবীজির যুগে একটা মেয়ে ৯ বছর বয়সে পরিপক্ব হয়ে যেতো, এখন সেটা হয় ১৩–১৪ বা তারও বেশি বয়সে।
তাই ইসলামে বিয়ে বৈধ তখনই, যখন শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রাপ্তবয়স্কতা অর্জিত হয়।
> 📖 ইবনে কাসির তাফসিরে বলা হয়:
“যার বিয়েতে উপযুক্ততা নেই—তার বিয়ে ভেঙে দেয়া হবে।”
📌 একটি মাসআলা জানুন:
ইমাম আবু হানিফা (রহ.) বলেন:
“কোনো মেয়ের মধ্যে signs of puberty (বালেগ হওয়া) না থাকলে, তার বিয়ে হতে পারে না।”
🛑 তাহলে কি নবীজি (সা.) তখনকার সমাজকে অমান্য করে বিয়ে করেছিলেন? না!
তিনি এমন সমাজে ছিলেন, যেখানে ৯-১০ বছর বয়সেই কন্যারা গর্ভধারণে সক্ষম হতো—এটা আজকের বিজ্ঞানও মানে।
🧾 ডক্টর ম্যারগারেট ম্যাকহ্যারি, একজন আমেরিকান চিকিৎসক তাঁর জার্নালে বলেন:
> “প্রাকৃতিক পরিবেশ, খাদ্যাভ্যাস ও বংশগতির কারণে প্রাচীনকালে মেয়েরা অনেক কম বয়সে শারীরিক পরিপক্বতা অর্জন করত।”
🎤 মুফতি খাইরুল ইসলাম নোমানী এবার বলে ওঠেন (কণ্ঠ শক্ত করে):
“তুমি একটা বিষয় জানো না—নবীজির বিবাহ শুধু কামনার নয়, বরং এটি ছিল কৌশলগত, শিক্ষামূলক এবং সমাজ সংস্কারমূলক পদক্ষেপ।
আয়েশা (রা.) প্রায় ২২০০+ হাদিস বর্ণনা করেছেন—যার অনেকগুলো গোপন অন্তরঙ্গ বিষয়ে, যা অন্য কেউ জানতেই পারত না।
আজ নারীরা পর্দা, পবিত্রতা, স্ত্রীর হক এসব তাঁর মাধ্যমেই শিখেছে।
🗣️ নাস্তিক আসাদ নুর এবার থমকে যায়। একটু স্তব্ধ।
তার জবাব নেই।
তবে সে গোঁ ধরে বলে:
“তাও বলতে হবে—আজকের যুগে বাচ্চার বিয়ে জায়েজ নয়, তাই না?”
🧕 আলেম বলেন:
“শুনো, সময় বদলেছে, বয়সের পরিপক্বতা বদলেছে। আজ কোনো মেয়ে ১৮ বছরেও প্রাপ্তবয়স্ক না হলে তার বিয়েও বৈধ নয়।
শরিয়ত বিয়ে বৈধ করে না বয়স দেখে, বরং দেখে পরিপক্বতা।
তুমি সময় ভুলে শরিয়তকে অপবাদ দিয়েছো। এটা জ্ঞান নয়, বরং কুফরি যুক্তি।”
🎉 মঞ্চে তখন টালমাটাল তালি।
কেউ কেউ ‘সুবহানাল্লাহ’ বলে কেঁদে ফেলেছে।
এক বৃদ্ধা কাঁপা হাতে বলে উঠলেন:
“আজ বুঝলাম, আয়েশা (রা.) কেন আমাদের মায়ের মর্যাদায়।”
📌 এই খণ্ডের মূল বার্তা:
✅ শরিয়তের বিধান সময়ভেদে নয়, প্রেক্ষাপটভেদে প্রযোজ্য।
✅ নবীজির (সা.) বিয়ে ছিল সমাজ সংস্কারের অংশ, কামনা চরিতার্থের জন্য নয়।
✅ বিয়ে বৈধ তখনই, যখন শরীর ও মনের পরিপক্বতা হয়।
✅ অপপ্রচারকারীদের উচিত, গবেষণা করে প্রশ্ন তোলা—not ইউটিউব দেখে অপবাদ ছড়ানো।
দ্বিতীয় অংশ শেষে গল্প চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।
দ্বিতীয় অংশে থাকবে নাস্তিকের নির্লজ্জ পালটা জবাব ও হঠাৎ একজন প্রগতিশীল নারীর অপ্রত্যাশিত অভিজ্ঞতা—যিনি নিজের জীবন দিয়ে বোঝাবেন, কেন ইসলামী পন্থাই সবচেয়ে নিরাপদ।
✨ চতুর্থ খণ্ড: নারীর অশ্রু ও সত্যের মুখোমুখি নাস্তিক
মঞ্চের আবহ বদলে গেছে।
তর্কের তাপ যেন ধীরে ধীরে গলে যাচ্ছে হৃদয়ের উষ্ণতায়।
নাস্তিক বক্তা আসাদ নূর এবার শেষ জোরে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে:
🗣️ নাস্তিক আসাদ নূর:
“তুমি যাই বলো হুজুর! আমার কথা অস্বীকার করতে পারো না—একটা ৯ বছর বয়সী মেয়ে কখনোই মানসিকভাবে বিবাহ উপযুক্ত হতে পারে না! আজকালকার চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণা দেখাও যে, এই বয়সে বিয়ে মানেই শিশু নির্যাতন! আর তোমরা এই কাজকে শরিয়তের মোড়কে বৈধ বলো—তোমরা আসলে ধর্মের নামে বর্বরতা কায়েম করো!”
মঞ্চে এক মুহূর্তের নীরবতা।
দর্শকদের মধ্যে গুঞ্জন।
কিছু মুখে সংশয়, কেউ কেউ চোখে জল।
ঠিক তখন, মুফতি খাইরুল ইসলাম নোমানী সাহেব কিছু বলতে যাচ্ছেন, এমন সময়…
👩🦱 একজন নারী দাঁড়িয়ে পড়লেন। পর্দানশীন, পরিপাটি। গলায় কাঁপা কণ্ঠ। হাতে মাইক্রোফোন।
“আমি সুমাইয়া রহমান। আপনারা কেউ হয়ত চিনবেন না। আমি একসময় নারী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন কর্মী ছিলাম।
আমি বিয়ে করেছিলাম ২২ বছর বয়সে। পড়াশোনা শেষ করে, ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন নিয়ে।
আমার স্বামী ছিলেন শিক্ষিত, প্রগতিশীল—সব সামাজিক আন্দোলনে ছিলেন।
আমরা ভাবতাম, ইসলামের মত পুরনো নিয়মে নয়—আমরা আধুনিক উপায়ে জীবন সাজাবো।”
😔 “কিন্তু আজ আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি...
আমার স্বামী ছিল এক্সট্রা ফ্রিডমের নামে বিকৃত চিন্তার মানুষ।
শরীর ছিল উপভোগের বস্তু, নয় ভালোবাসার আমানত।
তার কথায় প্রেম, আর আচরণে বিষ।
তিন বছরের মাথায় আমাদের সংসার ভেঙে যায়।
আমি হতাশ হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করি।
তখন আমি এক বৃদ্ধা হুজুর বেগমের সংস্পর্শে আসি।
তিনি আমাকে ইসলামের নারীত্ব শেখালেন।
আমি হিজাব নিতে শিখলাম, তাকওয়া বুঝতে শিখলাম।
😭 “আজ আমার বয়স ৩৫। আমি বলছি—
নবীজির (সা.) সংসার ছিল ভালোবাসা, জ্ঞান ও নিরাপত্তার ঘর।
যাকে তোমরা শিশু বলে গালি দাও—তিনি আয়েশা (রা.) ছিলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জ্ঞানবতী নারী,
যাঁর হাদিস ছাড়া তোমরা স্ত্রীর অধিকার, তালাক, রজঃস্রাবকালীন নামাজ ইত্যাদি জানতেই না।
আজ আধুনিক বিয়ে মানে প্রেমের নামে শরীরের ব্যবসা।
আর ইসলামের বিয়ে মানে—ভালোবাসা, দায়িত্ব, ও প্রশ্রয়।”
🌟 “আজ আমি ইসলাম গ্রহণ করেছি।
নাস্তিকতা আমাকে স্বাধীনতা দেয়নি, দিয়েছে দুঃখ।
ইসলাম আমাকে দিয়েছে মর্যাদা, আশ্রয়, মা হয়ে ওঠার সম্মান।”
মঞ্চ স্তব্ধ।
নাস্তিকের চোখ নিচু।
মুফতি খাইরুল ইসলাম নোমানী হুজুর ধীরে ধীরে বলেন:
"সত্য কখনো হারে না—সে দেরিতে হলেও জিতে যায়।
আর নারী—শুধু শরীর নয়, সে একটা মহাসংজ্ঞা।
ইসলামে সে একজন মা, একজন শিক্ষক, একজন বেহেশতের দরজা।”
📌 এই খণ্ডের মূল শিক্ষা:
✅ একান্ত বাস্তবতা ছাড়া সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত নয়
✅ ইসলামের নারীর মর্যাদা আজো তুলনাহীন
✅ আধুনিকতার নামে নারীরা সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়েছে
✅ সত্য নিজেই কথা বলে—শুধু শোনার মন লাগে
তৃতীয় অংশে- থাকবে:
🔹 নাস্তিক বক্তার হঠাৎ ইসলাম বিষয়ে আগ্রহ
🔹 কোরআনের আয়াত শুনে তার আবেগপ্রবণ প্রতিক্রিয়া
🔹 এবং শেষ মুহূর্তে সে যা বলবে, তা সবার চোখে জল এনে দেবে...
🕌 মঞ্চে নিস্তব্ধতা, কিন্তু হৃদয়ে তুফান...
মুফতি খায়রুল ইসলাম নোমানী হুজুর এক হাত উঁচু করে বললেন:
🗣️
"হে ভাই, তুমি ইসলাম বুঝতে না পেরে তাকে দোষ দাও।
তুমি মুসলিম পরিবারের সন্তান, কিন্তু ইসলাম শেখার সময় পাওনি।
আজ তুমি বলো, ৯ বছরের কন্যার বিয়ে অন্যায়!
আমি বলি, আধুনিক সমাজে ৯ বছরের শিশুরা কী করছে, তা কি জানো?"
📉 তিনি বলেন:
"এক জরিপে দেখা গেছে—
১২ বছর বয়সে ৪৩% মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয় ইউরোপে।
৯ বছর বয়সে মোবাইলে পর্নগ্রাফি দেখা শুরু করে আমেরিকান শিশুরা।
১৫ বছরে সন্তান জন্ম দিচ্ছে ১০% কিশোরী।
তাদের কেউ বিয়ে করেনি, কেউ নিরাপত্তা পায়নি।
তারা হয়ে উঠেছে সমাজের উপভোগ্য বস্তু, নয় তো বোঝা।"
📖 “আর আয়েশা (রাঃ)?
তিনি বিয়ে করেছেন নবিজিকে,
যিনি মানবতার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক।
তিনি শুধু স্ত্রী ছিলেন না,
ছিলেন জ্ঞানের উৎস, উম্মাহর মায়ের মর্যাদায় ভূষিত একজন মহীয়সী।”
😳 মঞ্চের সামনে বসে থাকা নাস্তিক বক্তার চোখে জল জমে...
সে ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ায়।
হাত তুলে বলল:
🧔 নাস্তিক:
"হুজুর, আমি এতদিন ইসলামকে যেভাবে চিনতাম, তা আসল ইসলাম ছিল না।
আমি শুধু কিছু ভিডিও দেখেই পুরো ধর্মকে ঘৃণা করেছি।
কিন্তু আজ আমি আপনাকে শুনে ভেঙে পড়েছি।
এই ইসলাম যদি সত্যিই এমন শ্রদ্ধা, নিরাপত্তা আর জ্ঞানের ধর্ম হয়—
তাহলে আমি আরও জানতে চাই।"
📖 মুফতি খাইরুল ইসলাম নোমানী হুজুর বললেন:
"আল্লাহ বলেন—
'فَبَشِّرْ عِبَادِ. الَّذِينَ يَسْتَمِعُونَ الْقَوْلَ فَيَتَّبِعُونَ أَحْسَنَهُ'
অর্থ: “সুসংবাদ দাও আমার সেই বান্দাদেরকে, যারা কথা শুনে তার মধ্যে শ্রেষ্ঠটিকে গ্রহণ করে।” (সূরা যুমার ১৭-১৮)
🎤 মঞ্চে সবার চোখে অশ্রু।
কেউ আর তর্ক করেনা।
কেউ আর অপমান করেনা।
সবাই বোঝে—জবাব গালি দিয়ে নয়, হৃদয় দিয়ে দিতে হয়।
সত্যের আলো যাকে স্পর্শ করে, সে আর আগের মতো থাকে না।
---
📌 এই খণ্ডের শিক্ষা:
✅ ইসলামকে বুঝে জানতে হবে, শুনে নয়
✅ সত্য উপস্থাপনের সেরা পদ্ধতি—আদব ও প্রজ্ঞা
✅ নারী স্বাধীনতা মানেই শরীরের মুক্তি নয়—মর্যাদার নিরাপত্তাই আসল
✅ একটি মঞ্চ, একটি প্রশ্ন, একটি চোখের জল—পরিবর্তন এনে দিতে পারে একটি জীবনেও
লেখক মাওলানা মোঃ ছাকিব।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। অনুগ্রহ করে শালীন ভাষায় কমেন্ট করুন।"