GDPR সম্মতি

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করার জন্য আমরা কুকি এবং আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করি। আপনার সম্মতি থাকলে আমরা এই তথ্যগুলি সংগ্রহ করতে পারি। আপনি চাইলে আপনার সম্মতি দিতে পারেন অথবা নীচের পছন্দগুলি পরিবর্তন করতে পারেন। সম্মতি দিন | পছন্দ পরিবর্তন করুন

শনিবার, ২৯ মার্চ, ২০২৫

পরীর ছোঁয়া (৩৭তম খণ্ড)

 পরীর ছোঁয়া (৩৭তম খণ্ড)

হাসানের রহস্যময় এক রাত্রি, যেখানে সত্য ও মিথ্যার লড়াই শুরু হয়।
সত্যের পথে চলার জন্য হাসানের প্রস্তুতি শুরু হলো। কী অপেক্ষা করছে তার জন্য? জানতে পড়ুন ৩৭তম খণ্ড।


রাতের অন্ধকারে চাঁদের মৃদু আলো গাছের পাতায় পড়ে এক মোহনীয় দৃশ্যের সৃষ্টি করছিল। বাতাসে হালকা শীতলতা, আর দূর থেকে ভেসে আসা কোনো এক রাতজাগা পাখির ডাক যেন পরিবেশকে আরও রহস্যময় করে তুলছিল।

হাসান জানালার পাশে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিল। তার চিন্তাগুলো অদ্ভুতভাবে এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিল। কিছুদিন আগেও তার জীবন ছিল সাধারণ, কিন্তু এখন সে এমন এক পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে, যা সে কখনো কল্পনাও করেনি। এক রহস্যময় মেয়ের আগমন, তার কথাবার্তা, আচরণ—সবকিছুই যেন ধীরে ধীরে হাসানের জীবনকে বদলে দিচ্ছে।


সে যখন চিন্তায় মগ্ন, ঠিক তখনই দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ হলো। হাসান ধীর পায়ে দরজার কাছে গিয়ে খুলতেই দেখতে পেল, সে মেয়েটি দাঁড়িয়ে আছে। তার চোখে অদ্ভুত এক রহস্য, যেন কোনো গোপন সত্য লুকিয়ে আছে।


"তুমি আবার এখানে?" হাসানের কণ্ঠে বিস্ময়।

মেয়েটি কিছুক্ষণ চুপ করে রইল, তারপর ধীর কণ্ঠে বলল, "আমার তোমার সঙ্গে কথা আছে।"


হাসান একটু বিরক্ত হলো। "এখন রাত অনেক হয়েছে। সকালে কথা বলা যাবে না?"

মেয়েটি এক পা বাড়িয়ে বলল, "এটা এমন এক বিষয়, যা সময় অপেক্ষা করবে না।"

হাসান বুঝতে পারল, বিষয়টি গুরুতর হতে পারে। সে দরজাটা সম্পূর্ণ খুলে দিল। মেয়েটি ঘরে প্রবেশ করল, আর হাসানের মনে এক অজানা কৌতূহল জন্ম নিল।


মেয়েটি কিছুক্ষণ নীরব থাকার পর বলল, "তুমি কি কখনো এমন অনুভব করেছ যে, কেউ তোমাকে নজরে রাখছে?"


হাসানের কপালে ভাঁজ পড়ল। "না, এমন কিছু মনে হয়নি। কিন্তু আজকাল কিছু অদ্ভুত ঘটনা ঘটছে।"


মেয়েটি মাথা নাড়ল। "সেগুলো নিছক কাকতালীয় নয়। তোমাকে থামানোর জন্য কেউ না কেউ কাজ করছে।"


হাসান ভাবনার গভীরে তলিয়ে গেল। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনাগুলো মনে পড়ল—কেউ তার ফোনে অদ্ভুত বার্তা পাঠিয়েছিল, তার ঘরের সামনে অচেনা কিছু মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করেছিল, এমনকি কয়েকদিন আগে কেউ তার নাম ধরে ডাকলেও সে কাউকে দেখতে পায়নি।


"তুমি কী বলতে চাচ্ছ?" হাসানের চোখে প্রশ্ন।


মেয়েটি নিচু স্বরে বলল, "তুমি হয়তো বুঝতে পারছ না, কিন্তু যারা অন্যায়ের পক্ষে, তারা কখনো চায় না যে সত্য প্রচার হোক। তোমার সাহসিকতা, তোমার প্রশ্ন করা মানসিকতা—সব কিছুই কারও না কারও জন্য হুমকি।"


হাসান চিন্তিত হয়ে গেল। "তাহলে আমার করণীয় কী?"


মেয়েটি একটু হাসল। "প্রস্তুত হও। তুমি যদি সত্যের পথে থাকতে চাও, তবে তোমাকে ধৈর্য ধরতে হবে, বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে এগোতে হবে।"


হাসান গভীরভাবে ভাবতে লাগল। সত্যের পথে চলার জন্য যে বিপদ আসবে, সে তা মেনে নিতে প্রস্তুত ছিল। কিন্তু এই নতুন রহস্যময় পরিস্থিতি তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ তৈরি করল।


হঠাৎ বাইরে কোনো এক শব্দ শোনা গেল। হাসান তৎক্ষণাৎ জানালার দিকে তাকাল। অন্ধকারে কিছু ছায়ামূর্তি নড়াচড়া করছে।


"তারা চলে এসেছে," মেয়েটি ফিসফিস করে বলল।


হাসান দ্রুত আলো নিভিয়ে দিল। ঘর অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে গেল, কিন্তু জানালার ফাঁক দিয়ে সে দেখতে পেল, কয়েকজন লোক ছায়ার মতো নীরবে এগিয়ে আসছে।


মেয়েটি বলল, "তুমি যদি আমাকে বিশ্বাস করো, তাহলে এখনই বের হতে হবে।"


হাসান কিছুটা দ্বিধায় পড়ল। কিন্তু পরিস্থিতি বুঝে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিল। "আচ্ছা, চলো।"


তারা পেছনের দরজা দিয়ে বের হয়ে গলির ভেতর ঢুকে পড়ল। রাতের অন্ধকার তাদের লুকিয়ে রাখল, কিন্তু পেছনে ধ্বস্তাধ্বস্তির শব্দ শোনা যাচ্ছিল। যেন কেউ জোরপূর্বক দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করছে।


"তারা কি আমাদের খুঁজে পাবে?" হাসান ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করল।


মেয়েটি মাথা নাড়ল। "তুমি নিরাপদে থাকলে সময়মতো সব বুঝতে পারবে।"


হাসান আর কিছু জিজ্ঞেস করল না। তারা দ্রুত পায়ে অন্ধকার পথে অদৃশ্য হয়ে গেল।


কিছুক্ষণ হাঁটার পর তারা একটি পুরোনো মসজিদের সামনে এসে দাঁড়াল। মসজিদটি ছোট হলেও স্থাপত্যশৈলীতে অপূর্ব। চারপাশ নিস্তব্ধ, শুধু মৃদু বাতাসের শব্দ শোনা যাচ্ছে।


"আমরা এখানে কেন এসেছি?" মাহির অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল।


মেয়েটি মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করল। "তুমি কি জানো, নিরাপত্তা কোথায় পাওয়া যায়? আল্লাহর ঘরেই।"


হাসান একটু থমকে গেল। সত্যিই তো, পৃথিবীর সব বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য একমাত্র আশ্রয়স্থল আল্লাহ। সে মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করল, আর মেয়েটির কথাগুলো গভীরভাবে ভাবতে লাগল।


এই রাত, এই রহস্যময় পরিস্থিতি, আর এই নতুন চ্যালেঞ্জ—সব মিলিয়ে হাসানের জীবনের নতুন এক অধ্যায় শুরু হলো।


@@@


হাসানের মনে এক অদ্ভুত অনুভূতি কাজ করছিল। কয়েকদিন ধরে সে যে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজছিল, আজ যেন তার সামনে ধীরে ধীরে খুলে যাচ্ছে। কিন্তু সেই উত্তরগুলো কি তাকে শান্তি দেবে, নাকি আরও বিভ্রান্ত করবে?


রাতের আকাশে চাঁদ স্পষ্ট, তার আলোয় পুরো উঠোন আলোকিত। হাসান গভীর চিন্তায় মগ্ন ছিল। হঠাৎই তার কানে ভেসে এলো এক রহস্যময় কণ্ঠস্বর। "তুমি কি সত্য জানতে চাও?"


সে দ্রুত চারপাশে তাকাল, কিন্তু কাউকে দেখতে পেল না। কণ্ঠস্বরটি আবারও বলল, "তুমি কি সত্যের জন্য প্রস্তুত?"


হাসান এবার সাহস করে বলল, "আমি সত্য জানতে চাই।"


একজন রহস্যময় ব্যক্তি ছায়ার আড়াল থেকে বেরিয়ে এলো। তার চোখে ছিল এক অদ্ভুত শক্তি। তিনি ধীরে ধীরে হাসানের দিকে এগিয়ে এলেন। "তবে এসো, আমি তোমাকে এমন কিছু দেখাবো যা তোমার বিশ্বাসকে আরও মজবুত করবে।"


মেয়েটি পাশ থেকে দেখছিল, যেন এই মুহূর্তটির জন্যই অপেক্ষা করছিল।


তারা ধীরে ধীরে ঘরের ভেতর প্রবেশ করল। ঘরের এক কোণে রাখা ছিল একটি পুরনো কাঠের বাক্স। রহস্যময় ব্যক্তি বাক্সটির দিকে ইঙ্গিত করে বললেন, "এখানে এমন কিছু আছে যা সত্যকে প্রকাশ করে। কিন্তু এটি দেখার আগে তোমাকে মনে রাখতে হবে— যখন তুমি সত্য জানতে পারবে, তখন আর আগের মতো থাকতে পারবে না।"


হাসানের নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল উত্তেজনায়। সে ধীরে ধীরে মাথা নাড়ল।


ব্যক্তিটি বাক্স খুললেন, এবং হাসানের সামনে এক চমকপ্রদ দৃশ্য উন্মোচিত হলো। ভেতরে রাখা ছিল কিছু প্রাচীন পাণ্ডুলিপি, কিছু চিঠি এবং একটি পুরনো, হলদে হয়ে যাওয়া ডায়েরি।


"এগুলো কী?" হাসান কৌতূহলী দৃষ্টিতে তাকাল।


রহস্যময় ব্যক্তি শান্ত গলায় বললেন, "এগুলো এমন কিছু মানুষের লেখা, যারা সত্যের পথে চলতে গিয়ে বড় মূল্য দিয়েছে। কেউ শহীদ হয়েছে, কেউ জীবনভর সংগ্রাম করেছে, আর কেউ অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে নিখোঁজ হয়েছে।"



হাসান হাত ডায়েরির দিকে বাড়িয়ে দিল। প্রথম পাতায় লেখা ছিল—


‘সত্যের পথ কখনো সহজ নয়, কিন্তু এটি একমাত্র পথ যা আত্মাকে মুক্তি দেয়। যে এই পথ বেছে নেবে, তাকে শত্রুদের মোকাবিলা করতে হবে, ভালোবাসার মানুষদের হারাতে হবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে আলোর পথে পৌঁছাবে।’


লেখাগুলো পড়ে হাসানের হৃদয় কেঁপে উঠল। যেন সে নিজের ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছে এই পাতার প্রতিটি শব্দে।


মেয়েটি পাশে দাঁড়িয়ে বলল, "তুমি যদি সত্যিকারের ন্যায়ের পথে চলতে চাও, তবে প্রস্তুত থাকতে হবে। তোমার সামনে আরও অনেক বাধা আসবে, অনেক শত্রু দাঁড়াবে। তুমি কি তা সহ্য করতে পারবে?"


হাসান গভীর শ্বাস নিয়ে বলল, "আমি প্রস্তুত। যদি এটি সত্যের পথ হয়, তবে আমি পিছু হটব না।"


ব্যক্তিটি হাসলেন, যেন হাসান এই সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিলেন। তিনি বললেন, "তাহলে আজ থেকে তোমার যাত্রা শুরু হলো। কিন্তু মনে রেখো, প্রতিটি সত্যের জন্য মূল্য দিতে হয়। এবং তোমাকে সেই মূল্যের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।"



রাত গভীর। হাসান বসে আছে ছোট্ট একটি মাটির ঘরে। বাইরে বাতাস বইছে, যেন প্রকৃতি তার সামনে আসন্ন ঝড়ের সংকেত দিচ্ছে।


মেয়েটি ধীরে ধীরে তার পাশে এসে বসল। "তুমি কি দ্বিধায় পড়ে গেছো?" সে প্রশ্ন করল।


হাসান দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, "সত্যের পথ কঠিন হবে জানতাম, কিন্তু এতটা কঠিন হবে কল্পনাও করিনি।"


মেয়েটি মৃদু হেসে বলল, "তবে কি পিছু হটতে চাও?"


হাসান মাথা নাড়ল, "না, আমি পিছু হটবো না। আমি জানি, এই পথেই প্রকৃত মুক্তি আছে। কিন্তু আমার ভয় হচ্ছে, আমি কি পারবো? আমি কি সত্যিই প্রস্তুত?"


মেয়েটি তার দিকে তাকাল, তার চোখে গভীর মমতা। "আল্লাহ যার অন্তরে সত্যের আলো জ্বালিয়ে দেন, তাকে আর কিছু দরকার হয় না। তুমি শুধু নিজের নিয়ত ঠিক রাখো, আল্লাহ তোমাকে শক্তি দেবেন।"


এমন সময় দরজায় জোরে কড়া নাড়ার শব্দ হলো। হাসান চমকে উঠল।


"কে ওখানে?" মেয়েটি নিচু গলায় বলল।


কোনো উত্তর এলো না, কিন্তু দরজায় আবারও আঘাত পড়লো, এবার আরও জোরে।


মাহির উঠে দাঁড়াল। সে জানত, সত্যের পথে হাঁটতে গেলে শত্রুরা তাকে থামানোর চেষ্টা করবে।


সে ধীরে ধীরে দরজার কাছে এগিয়ে গেল এবং হাত বাড়িয়ে দরজার কপাট খুলে দিল।


এক ঝলক ঠান্ডা বাতাস ঘরের ভেতর প্রবেশ করল। বাইরে অন্ধকারের মধ্যে কয়েকটি ছায়ামূর্তি দাঁড়িয়ে ছিল। তাদের চোখে বিদ্বেষের আগুন জ্বলছিল।


"তুমি কি মনে করেছো, সত্যের পথে হাঁটবে আর আমরা কিছু বলবো না?" তাদের নেতা কঠিন কণ্ঠে বলল।


হাসানের মুখে দৃঢ়তা ফুটে উঠল। সে জানত, এই রাতের পরীক্ষা কঠিন হবে। কিন্তু সে প্রস্তুত।

চলবে....


বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০২৫

পরীর ছোঁয়া পর্ব ৩৬: নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা - হাসানের সাহসিকতা এবং শত্রু পরাজয়

 পর্ব ৩৬: নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা

হাসান, শত্রুদের পরাস্ত করে ইসলামের শক্তির মাধ্যমে তাদের জীবন পরিবর্তন করে, এবং এক অমুসলিম মেয়ে ইসলামের দিকে আগ্রহী হয়ে ওঠে।
হাসান, শত্রুদের পরাস্ত করে ইসলামের শক্তির মাধ্যমে তাদের জীবন পরিবর্তন করে, এবং এক অমুসলিম মেয়ে ইসলামের দিকে আগ্রহী হয়ে ওঠে।


(প্রথম অংশ)

রাত গভীর, আকাশে একফালি চাঁদ ঝুলে আছে। ধীর বাতাস বইছে, যেনো কোনো এক অনিবার্য ঘটনার সাক্ষী হতে চলেছে। হাসান সতর্ক দৃষ্টিতে চারপাশ পর্যবেক্ষণ করছে। তার সামনে বিশাল এক অন্ধকার গলি, যেখানে কিছুক্ষণ আগেই এক রহস্যময় ছায়া ঢুকে গেছে।


"এভাবে রাতের বেলায় কারা ঘুরে বেড়ায়?" হাসান নিজেকেই প্রশ্ন করল।


সে ধীর পায়ে এগিয়ে গেল। হঠাৎ তার কানে ভেসে এলো এক নারীর চাপা কান্নার শব্দ। সে তৎক্ষণাৎ থেমে গেল। ধৈর্য ধরে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করল। কণ্ঠস্বরটা আসছে পাশের এক পরিত্যক্ত ভবনের দিক থেকে।


হাসান ধীরে ধীরে সেখানে গিয়ে উঁকি দিল। যা দেখল, তা তার হৃদয়কে ক্ষোভে জ্বালিয়ে দিল!


একদল নষ্ট চরিত্রের লোক, তাদের মধ্যে কয়েকজন অমুসলিম। তাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে এক তরুণী, চেহারায় ভয় আর আতঙ্কের ছাপ। তার গায়ে এক ঢিলা শাল ছিল, যা দেখে বোঝা যাচ্ছে সে একজন মুসলিম নারী।


"তুমি আমাদের হাত থেকে পালাতে পারবে না!" এক অমুসলিম লোক উচ্চস্বরে বলল।


"আল্লাহ আমাকে রক্ষা করবেন!" মেয়েটি দৃঢ় কণ্ঠে বলল।


হাসানের রক্ত টগবগ করে উঠল। সে ধৈর্য হারাল না, কারণ এখনো সঠিক সময় আসেনি। সে দ্রুত একদিকে সরে গিয়ে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করল। শত্রুরা সংখ্যায় বেশি, কিন্তু তাদের মধ্যে শৃঙ্খলা নেই। এটাই হাসানের সুযোগ!


সে একটা ধাতব রড তুলে নিয়ে ধীরে ধীরে তাদের দিকে এগিয়ে গেল।


"এই কাপুরুষদের বিরুদ্ধে আজ এক নতুন যুদ্ধ হবে," হাসান নিজের মনে বলল, তার চোখে তীব্র দৃঢ়তা ফুটে উঠল।


(চলবে…)


পর্ব ৩৬: নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা


(দ্বিতীয় অংশ)


চারপাশ নিস্তব্ধ, বাতাসের ধীর শোঁ শোঁ শব্দ ছাড়া আর কিছুই শোনা যাচ্ছে না। হাসান শক্ত করে ধাতব রডটি ধরল। ওর চোখে প্রতিশোধের আগুন জ্বলছে, কিন্তু সে ধৈর্য ধরে আছে। বীরত্ব মানেই শুধু লড়াই নয়, কখন কিভাবে আঘাত করা দরকার সেটাও জানা গুরুত্বপূর্ণ।


অপরাধীদের দলটি মেয়েটিকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু মেয়েটির সাহসও কম নয়। সে কাঁপছে ঠিকই, কিন্তু মুখে দৃঢ়তা স্পষ্ট।


“তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় না করো, তাহলে অন্তত মানুষের মতো ব্যবহার করো!” মেয়েটি তীব্র কণ্ঠে বলে উঠল।


“হা হা হা! আল্লাহ? তিনি কোথায়? যদি থাকতেন, তাহলে কি তোমার এই অবস্থা হতো?” এক নাস্তিক লোক ব্যঙ্গ করে বলল।


হাসান আর সহ্য করতে পারল না!


সে লাফিয়ে উঠে রড দিয়ে এক লোকের মাথায় সজোরে আঘাত করল। লোকটা চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। বাকিরা হতভম্ব হয়ে গেল। তারা এত দ্রুত আক্রমণের আশা করেনি!


হাসানের আঘাত ছিল এতটাই প্রচণ্ড যে, মুহূর্তের মধ্যেই আরও দুইজন আতঙ্কে পিছিয়ে গেল। কিন্তু শত্রুরা সংখ্যায় বেশি, এবং তারা এবার প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চাইছে।


"কাপুরুষের মতো পালাচ্ছ কেন? এসো, যদি সত্যিকারের শক্তি থাকে!" হাসান গর্জে উঠল।


একজন লোক ছুরি বের করে হাসানের দিকে ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইল, কিন্তু হাসান দ্রুত পাশ কাটিয়ে তার হাত মুচড়ে দিল। ছুরিটা নিচে পড়ে গেল, আর সে তীব্র ব্যথায় চিৎকার করে উঠল।


এদিকে, মেয়েটি দৌড়ে গিয়ে এক কোনায় দাঁড়াল। সে বুঝতে পারছে, হাসান একাই তাদের সবাইকে সামলাতে পারবে না। কিন্তু তার চোখে একধরনের আশার আলো জ্বলছে— যেন সে প্রথমবারের মতো সত্যিকারের বীরত্ব দেখছে!


“আজ বুঝতে পারবে মুসলমানদের ঈমানের শক্তি কী জিনিস!” হাসান বলে উঠল, তার রক্তগরম হয়ে আছে।


শত্রুরা একে একে চারপাশ থেকে ঘিরতে লাগল। হাসান তাদের চোখে ভয় দেখতে পাচ্ছে, কিন্তু তারা সংখ্যায় বেশি হওয়ায় নিজেদের সাহস বাড়ানোর চেষ্টা করছে।


সে দ্রুত একটা পরিকল্পনা করল। তাকে এই লড়াইয়ে টিকে থাকতে হবে, কারণ এখানে শুধু তার নিজের জীবন নয়, নিরপরাধ একজন মুসলিম নারীর সম্মানও জড়িত।


(চলবে…)


পর্ব ৩৬: নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা


(তৃতীয় অংশ)


চারপাশের বাতাস যেন ভারী হয়ে উঠেছে। নাস্তিকদের দলের বাকি লোকেরা ধীরে ধীরে হাসানকে ঘিরতে শুরু করল। তাদের চোখে ভয় থাকলেও সংখ্যার জোরে তারা হাসানকে দুর্বল করতে চাচ্ছে। কিন্তু হাসানের  চোখে কোনো ভয় নেই। সে জানে, ঈমানের শক্তির কাছে সংখ্যার কোনো মূল্য নেই!


একজন নাপিত চেহারার লোক সামনে এগিয়ে এল, হাতে লোহার রড। সে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বলল, “তুমি একা! আর আমরা পাঁচজন! তুমি কি মনে করছো তুমি আমাদের হারাতে পারবে?”


হাসান হেসে উঠল, তার মুখে আত্মবিশ্বাসের ঝলক।


“একজন মুমিন কখনো একা হয় না! আল্লাহ আমার সঙ্গে আছেন। আর তোমরা? তোমরা কিসের ভরসায় দাঁড়িয়ে আছো?”


লোকটি গর্জে উঠল, “আজ তোকে শেখাবো ঈমান দিয়ে যুদ্ধ হয় না!”


সে সজোরে রড তুলল, কিন্তু হাসান বিদ্যুৎগতিতে পাশ কাটিয়ে এক ঘুষিতে তার চোয়াল ভেঙে দিল! লোকটা ছিটকে গিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল, মুখ থেকে রক্ত ঝরছে!


"কে বলেছে ঈমানের শক্তি নেই?" মাহির গর্জে উঠল।


বাকি লোকেরা একটু পিছিয়ে গেল, কিন্তু তারা একে অপরের দিকে তাকিয়ে চোখের ইশারায় পরিকল্পনা করল। তিনজন একসঙ্গে হাসানের দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ল!


তবে হাসান প্রস্তুত ছিল!


সে নিচু হয়ে এক লাথি মারল সামনের লোকটির হাঁটুতে! লোকটা চিৎকার দিয়ে পড়ে গেল! আরেকজনকে সে ঘুরে দাঁড়িয়ে কনুইয়ের আঘাতে গুঁড়িয়ে দিল। কিন্তু তৃতীয়জন পেছন থেকে তার পিঠে একটা ভারী লোহার পাইপ দিয়ে আঘাত করল!


ধপ!


হাসান সামান্য সামনে হোঁচট খেল, ব্যথায় মুখ বিকৃত হলো। তবে সে মাটিতে পড়ল না। বরং দ্রুত ঘুরে দাঁড়িয়ে তার প্রতিপক্ষের হাতে লেগে থাকা লোহার পাইপ ধরে নিল!


“এটা দিয়ে আমাকে মারতে চেয়েছিলে? এবার আমি দেখাই কীভাবে এটা ব্যবহার করতে হয়!”


সে সেই পাইপ দিয়ে এমন এক আঘাত করল, লোকটা কাতরাতে কাতরাতে মাটিতে পড়ে গেল।


এদিকে মেয়েটি সেই জায়গা থেকে সবকিছু দেখছে, তার মুখে বিস্ময়! সে কখনো ভাবেনি, একা একজন মানুষ এতজনকে সামলাতে পারে!


“এটাই মুসলিমের আত্মবিশ্বাস! এটাই ইসলামের শিক্ষা!” মেয়েটির মনে জেগে উঠল এক নতুন উপলব্ধি।


তবে হাসান জানে, এই লড়াই এখনো শেষ হয়নি। কারণ সবচেয়ে ভয়ঙ্কর লোকটি এখনো সামনে আসেনি।


সে পিছনে তাকিয়ে দেখল—এক লম্বা চওড়া লোক একটা ধারালো ছুরি হাতে সামনে আসছে।


“তুমি সাহসী ঠিকই, কিন্তু আমি এই হাত দিয়েই আজ অনেক মানুষ মেরেছি! আজ তুমি আমার হাতের শিকার হবে!”


হাসান গভীরভাবে তাকাল, তার চোখে কোনো ভয় নেই।


“আমি দেখাবো, ঈমানদারদের হত্যা করা এত সহজ নয়।”


সে তার হাতে থাকা লোহার পাইপ শক্ত করে ধরল। এবার হবে আসল লড়াই!


(চলবে…)


পর্ব ৩৬: নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা

(চতুর্থ অংশ)

চারপাশে নিস্তব্ধতা। বাতাস ভারী হয়ে আছে রক্তের গন্ধে। আহত শত্রুরা কাতরাচ্ছে, কিন্তু সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রতিপক্ষ এখনো অক্ষত। তার হাতে চকচকে ধারালো ছুরি, চোখে আগুন।

“তুমি শক্তিশালী, মানতে হবে!” লোকটি বলল, ছুরিটি হাতে ঘোরাতে ঘোরাতে। “কিন্তু মনে রেখো, এই হাত দিয়ে আমি অনেক মুমিনকে হত্যা করেছি! আজ তুমিও তার ব্যতিক্রম হবে না!”

হাসান সামান্য হাসল।

“যে হাত মুমিনের রক্তে রঞ্জিত, সেই হাত আজ ধ্বংস হবে, ইনশাআল্লাহ!”

লোকটি আর অপেক্ষা করল না। সে বজ্রগতিতে হাসানের দিকে ছুরি চালিয়ে দিল!

স্র্র্ররাশ!

একটুর জন্য এড়াতে পারল হাসান, কিন্তু জামার একপাশ কেটে গেল।

লোকটি আবার আঘাত করল, এবারও হাসান সরে গেল, কিন্তু ঠিক তখনই সে পেছনে থাকা একটি ভাঙা কাঠের বাক্সে ধাক্কা খেল।

এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে শত্রুটি ছুরিটি সজোরে হাসানের বুকে বসাতে চাইল!

কিন্তু হাসান বিদ্যুৎগতিতে তার কব্জি ধরে ফেলল!

“তুমি ভাবছো, ঈমানদাররা সহজে হেরে যায়?”

সে তার সর্বশক্তি দিয়ে লোকটির কব্জি চেপে ধরল!

লোকটি বুঝতে পারল, সে ফেঁসে গেছে।

“না... এতো শক্তি কীভাবে?”

হাসান ধাক্কা দিয়ে লোকটিকে দূরে সরিয়ে দিল। সে ছুরিটি কেড়ে নিয়ে ঘুরিয়ে তার হাতে ধরিয়ে বলল,

“এই ছুরি দিয়ে তুমি মুমিনদের হত্যা করেছো! এবার নিজেই ভোগ করো এর ফল!”

সে দ্রুত ছুরিটি লোকটির হাতে পেঁচিয়ে এমনভাবে চেপে ধরল যে, ছুরির ধারাল অংশ তার নিজের হাতে ঢুকে গেল!

চিৎকার করে উঠল লোকটি!

সে ব্যথায় কাতরাতে কাতরাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। হাসান ধীরে ধীরে তার সামনে দাঁড়িয়ে বলল,

“তাওবা করো! আল্লাহর কাছে ফিরে এসো! না হলে তোমার শাস্তি আরও ভয়ংকর হবে!”

লোকটি ব্যথায় কাঁপতে কাঁপতে মাথা নাড়াল, কিন্তু কিছু বলল না।

ঠিক তখনই সেই অপরিচিত মেয়েটি সামনে এগিয়ে এল।

তার চোখে বিস্ময় আর শ্রদ্ধা।

“তুমি কে? তুমি কি মানুষ, নাকি কোনো ফেরেশতা?”

হাসান তাকিয়ে রইল, তারপর বলল,

“আমি একজন সাধারণ মুসলিম! ইসলাম আমাকে শিখিয়েছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে, দুর্বলের পাশে দাঁড়াতে, এবং সত্যের পথে লড়াই করতে!”

মেয়েটি কিছুক্ষণ চুপ রইল, তারপর ধীরে ধীরে বলল,

“আমি… আমি ইসলাম সম্পর্কে জানতে চাই!”

হাসানের চোখে প্রশান্তির হাসি ফুটে উঠল।

“আলহামদুলিল্লাহ! সত্যের আলো যার কপালে থাকে, সে একদিন না একদিন ঠিকই সে আলো খুঁজে পায়।”

(চলবে…)


---

মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫

পরীর ছোঁয়া পর্ব ৩৫: অন্ধকারের মধ্যে আলো

 

পর্ব ৩৫: অন্ধকারের মধ্যে আলো

 
হাসান, যাবের ও এক অচেনা মেয়ের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছে, সামনে হঠাৎ আবির্ভূত হয়েছে এক রহস্যময় পরী। রাতের আঁধারে আলোর আভা ছড়িয়ে পড়েছে।
"সত্যের জন্য লড়াই করতে হলে, কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে…"

(প্রথম অংশ)

চারদিকে ঘন অন্ধকার। রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে মাঝে মাঝে শোনা যাচ্ছে ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক। হাসান ও জাবের ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে, হাতের অস্ত্রগুলো আরও শক্ত করে ধরল তারা। চারপাশে শত্রুর উপস্থিতি টের পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু কোথায়, কতজন—তা নিশ্চিত নয়।

"সতর্ক থেকো, জাবের," হাসান ফিসফিস করে বলল।

জাবের মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি জানাল। দুজনেই জানে, আজকের রাত খুব গুরুত্বপূর্ণ। সত্যের পথ বেছে নেওয়া কখনোই সহজ ছিল না।

এক অদ্ভুত মেয়ের আগমন

তারা যখন সামনে এগিয়ে যাচ্ছিল, তখন হঠাৎ পেছন থেকে এক নারীকণ্ঠ ভেসে এলো—

"আপনারা কি জানেন, আপনাদের জন্য ওরা ফাঁদ পেতেছে?"

দুজনেই চমকে উঠল! দ্রুত পেছন ফিরে তাকাতেই দেখতে পেল এক যুবতী দাঁড়িয়ে আছে। চেহারায় আভিজাত্য, চোখে অপার আত্মবিশ্বাস। পরিপূর্ণ পর্দা করা, শুধু চোখ দুটো দেখা যাচ্ছে। কিন্তু সে এক হাতে তলোয়ার ধরে রেখেছে!

"আপনি কে?" রাশেদ বিস্মিত কণ্ঠে বলল।

"আমার পরিচয় গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু জেনে রাখুন, যদি এই পথে এগোন, তবে ভয়ংকর বিপদের মুখে পড়বে।"

হাসান কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল, "আমরা সত্যের জন্য লড়ছি। ভয় পেলে তো শয়তানই জিতে যাবে।"

মেয়েটি সামান্য হাসল, তারপর বলল—

"যদি সত্যের জন্যই লড়াই করো, তবে আমি তোমাদের সাহায্য করব।"

নতুন শত্রুর আগমন

হঠাৎ পেছন থেকে কয়েকজনের গলার শব্দ শোনা গেল—

"ওরা এখানেই আছে! ঘেরাও করো!"

হাসান, জাবের ও অচেনা মেয়েটি দ্রুত সতর্ক হয়ে গেল। এবার কি সত্যিই তারা শত্রুদের কবলে পড়ে গেল? নাকি এই লড়াইয়ে নতুন এক চমক অপেক্ষা করছে?

(চলবে… দ্বিতীয় অংশ আসছে…)

 

 

পর্ব ৩৫: অন্ধকারের মধ্যে আলো

(দ্বিতীয় অংশ)

শত্রুর ফাঁদ

হাসান, জাবের ও সেই রহস্যময়ী মেয়েটি দ্রুত আড়াল খুঁজল। সামনের গাছগুলোর আড়ালে গিয়ে দাঁড়াতেই তারা দেখতে পেল, প্রায় সাত-আটজন অস্ত্রধারী চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলেছে।

"তারা আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে গেছে," জাবের ফিসফিস করে বলল।

"তুমি আগে থেকে কিভাবে জানলে ওরা ফাঁদ পেতেছে?" হাসান মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করল।

"আমি তাদের মধ্যে কাজ করি," মেয়েটি সংক্ষেপে বলল।

"মানে তুমি…!" হাসান বিস্ময়ে থেমে গেল।

"হ্যাঁ, আমি তাদের গুপ্তচর হিসেবে কাজ করতাম। কিন্তু সত্য জানার পর, আর থাকতে পারিনি। এখন আমি তোমাদের সাহায্য করতে চাই।"

হাসান আর জাবের দ্রুত পরিস্থিতি বুঝে নিল। এখন কোনো ভুল করলে বেঁচে ফেরার সুযোগ থাকবে না।

প্রথম আক্রমণ

একজন শত্রু উচ্চস্বরে চিৎকার করল, "আমরা জানি তোমরা এখানে আছো! বেরিয়ে আসো, নইলে গুলি চালানো হবে!"

হাসান আর দেরি করল না। এক ঝটকায় বের হয়ে ছুরিটি ছুঁড়ে মারল! শত্রুর একজন গার্ড মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ল।

জাবেরও গুলি চালিয়ে দিল আরেকজনের দিকে। মেয়েটিও তরবারি বের করে শত্রুর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল!

শত্রুরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিনজন মিলে ভয়ংকর আক্রমণ শুরু করল।

আল্লাহর ওপর ভরসা

হাসানের কানে তখন একটা আয়াত বাজছিল—

"وَلَا تَهِنُوا وَلَا تَحْزَنُوا وَأَنتُمُ الْأَعْلَوْنَ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ"
"তোমরা দুর্বল হয়ো না, দুঃখিত হয়ো না। যদি তোমরা ঈমানদার হও, তবে তোমরাই বিজয়ী হবে।" (সূরা আলে ইমরান: ১৩৯)

সে জানত, এই যুদ্ধ শুধু অস্ত্রের নয়, বরং ঈমানেরও।

এগিয়ে এলো আরও তিনজন শত্রু। এবার কি হাসান, জাবের ও সেই অচেনা মেয়েটি টিকে থাকতে পারবে?

(চলবে… তৃতীয় অংশ আসছে…)

 

 

পর্ব ৩৫: অন্ধকারের মধ্যে আলো

(তৃতীয় অংশ)

শত্রুর শেষ ফাঁদ

হাসানের হাত কাঁপছিল না, বরং প্রতিটি আঘাত ছিল দৃঢ়। জাবের পাশে দাঁড়িয়ে গুলি চালিয়ে যাচ্ছিল, আর মেয়েটি তরবারি দিয়ে শত্রুদের মোকাবিলা করছিল।

কিন্তু শত্রুরা এত সহজে হার মানার পাত্র নয়।

"পেছনে দেখ!" মেয়েটি হঠাৎ চিৎকার করে উঠল।

হাসান এক লাফে সরে গেল, আর সঙ্গে সঙ্গে একটা ছুরি তার কানের পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেল!

জাবের বুঝতে পারল, এরা শুধুমাত্র সাধারণ সন্ত্রাসী নয়, বরং সুগঠিত একটি দল।

"এরা কারা?" জাবের জানতে চাইল।

"তোমরা যা জানো, তার থেকেও বেশি শক্তিশালী এক সংগঠন।" মেয়েটি বলল।

হাসান এক ঝলকে মেয়েটির চোখের দিকে তাকিয়ে দেখল সেখানে ভয় নেই, বরং প্রতিশোধের আগুন জ্বলছে।

"আমাদের দ্রুত এখান থেকে বের হতে হবে," হাসান বলল।

কিন্তু ঠিক তখনই…

চতুর পলায়ন

শত্রুরা বুঝে গেছে যে সরাসরি যুদ্ধ করে জেতা সম্ভব নয়। তারা চারদিক থেকে ঘিরে ফেলল, এবার হাতিয়ার নয়—তাদের পরিকল্পনা ছিল ভিন্ন।

"ধরা দাও! নইলে…!"

এতটুকু বলেই এক শত্রু মেয়েটির দিকে বন্দুক তাক করল!

হাসান বুঝতে পারল, সরাসরি যুদ্ধ করলে এবার তারা হারতে পারে।

"জাবের, ধোঁকা দাও!"

জাবের সঙ্গে সঙ্গে একটা ধাক্কা দিয়ে শত্রুর হাত থেকে বন্দুক ফেলে দিল। মেয়েটি সেই সুযোগে একটা চাকু বের করে শত্রুর ঘাড়ে বসিয়ে দিল!

হাসান আর দেরি করল না। একটা গুলি চালিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আরেকজন শত্রুকে মাটিতে ফেলে দিল।

"দ্রুত পালাও!"

তারা তিনজন দৌড়ে পাশের জঙ্গলে ঢুকে গেল। পেছন থেকে শত্রুরা গুলি চালাল, কিন্তু তারা সরে যেতে সক্ষম হলো।

নতুন সংকট

হাসানের বুক ধুকপুক করছিল।

"তুমি আমাদের সাহায্য করলে কেন?" হাসান মেয়েটিকে প্রশ্ন করল।

মেয়েটি চুপ করে ছিল কিছুক্ষণ, তারপর বলল—

"কারণ সত্যের জন্য লড়াই করাটা আমারও দায়িত্ব।"

পরীর ছোঁয়া?

ঠিক তখনই, হঠাৎ বাতাসের মধ্যে একটা অদ্ভুত সুবাস ছড়িয়ে পড়ল।

হাসান চমকে উঠল।

"এ কি…?"

একটা মিষ্টি কণ্ঠ ভেসে এলো—

"হাসান, তুমি কি সত্যের জন্য প্রস্তুত?"

(চলবে… চতুর্থ অংশ আসছে…)

 

 

পর্ব ৩৫: অন্ধকারের মধ্যে আলো

(চতুর্থ অংশ)

পরীর ফিরে আসা

হাসান ঘুরে দাঁড়াল। পরিচিত সেই কণ্ঠস্বর, পরিচিত সেই মিষ্টি সুবাস!

বাতাসের মধ্যে এক অদ্ভুত প্রশান্তি ছড়িয়ে পড়ল। অন্ধকারের মাঝেও মনে হচ্ছিল, চারপাশে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে।

রাশেদ ও মেয়েটি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল।

"পরী!" হাসান ধীরে ধীরে বলল।

সামনে দাঁড়িয়ে আছে সেই রহস্যময় সত্তা—পরী নূরসাবা। তার চোখের গভীরে ছিল অদ্ভুত এক মায়া, কিন্তু মুখে ছিল এক কঠিন বার্তা।

পরীর সতর্কতা

পরী নূরসাবা ধীরে ধীরে হাসানের দিকে এগিয়ে এল।

"তুমি বিপদের মধ্যে আছো, হাসান। তোমার শত্রুরা তোমার শেষ দেখতে চায়।"

হাসান এক মুহূর্ত চুপ করে থাকল।

"আমি জানি, কিন্তু আমি পিছু হটবো না। সত্যের জন্য লড়াই করে যাবো!"

পরী নূরসাবা গভীরভাবে তাকাল।

"সত্যের পথ কঠিন, হাসান। এটা শুধু শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নয়, বরং নিজের ভেতরের শয়তানের সাথেও যুদ্ধ। তুমি কি প্রস্তুত?"

হাসান কিছু বলল না, শুধু চোখ বন্ধ করল।

পরীক্ষার সামনে

পরী নূরসাবা একপাশে তাকিয়ে বলল—

"এই মেয়েটিকে বিশ্বাস করো, সে তোমার সঙ্গে থাকবে। কিন্তু মনে রেখো, সামনে আরও কঠিন পরীক্ষা আসছে।"

মেয়েটি এবার মুখ খুলল, "তাহলে তুমি আমাদের সাহায্য করবে?"

পরী নূরসাবা হালকা হাসল।

"আমি সবসময় থাকবো, কিন্তু আমার সাহায্য পেতে হলে তোমাদের ঈমান থাকতে হবে।"

শেষ মুহূর্তের সংকেত

তখনই, দূর থেকে একটা গর্জন ভেসে এলো।

হাসান দ্রুত চারপাশ দেখল।

জাবের বলল, "আমাদের এখনই বের হতে হবে!"

পরী নূরসাবা ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে গেল, আর তার কণ্ঠস্বর ভেসে এলো—

"সাবধান, হাসান! সত্যের জন্য তোমাকে বড় মূল্য দিতে হবে!"

হাসান শিহরিত হলো।

নতুন লড়াই শুরু

এবার সময় নষ্ট করার সুযোগ নেই।

তাদের সামনে এক ভয়ংকর রাত অপেক্ষা করছে…

(চলবে…)

সোমবার, ২৪ মার্চ, ২০২৫

পরীর ছোঁয়া পর্ব ৩৪: শেষ রক্ষার লড়াই

 

পর্ব ৩৪: শেষ রক্ষার লড়াই (১ম অংশ)

হাসান ও জাবের শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, চারপাশে গুলি চলছে, হঠাৎ এক রহস্যময় তীর এসে সব বদলে দিলো।
🔥 শত্রুর ফাঁদ ভেঙে সত্যের পথে এগিয়ে যাও!🔎 রহস্য আরও গভীর হচ্ছে! কে এই নতুন ব্যক্তি? হাসান ও জাবের কি বেঁচে ফিরতে পারবে?

চারপাশ অন্ধকার, বাতাসে উত্তেজনার গন্ধ। হাসান আর জাবের পেছনে সরে এলো, কিন্তু শত্রুরা এবার পুরোপুরি তাদের চারপাশ ঘিরে ফেলেছে।

"তোমরা যতই পালানোর চেষ্টা করো, আজ আর বাঁচতে পারবে না!"

অস্ত্রধারীদের নেতা ভয়ংকরভাবে হেসে উঠলো।

প্রথম পাল্টা আঘাত

হাসান চোখের ইশারায় জাবেরকে কিছু বোঝালো। জাবের মাথা নেড়ে বুঝিয়ে দিলো—এখনই সময়!

হঠাৎ হাসান ঝাঁপিয়ে পড়ে সামনে থাকা এক অস্ত্রধারীর বন্দুক কেড়ে নিয়ে তার গলায় আঘাত করলো!

"উফফ!" লোকটা কুকুরের মতো কুঁই কুঁই করে নিচে পড়ে গেল।

জাবের ততক্ষণে পাশের দুজনকে লাথি মেরে ফেলে দিলো। তাদের বন্দুক মাটিতে পড়ে গেল, মুহূর্তের মধ্যে সে সেটা তুলে নিয়ে শত্রুদের দিকে তাক করলো!

"এখন দেখো, শয়তানের দাসরা! সত্যের লড়াই কাকে বলে!"

বিদ্যুৎগতিতে প্রতিরোধ

শত্রুরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই হাসান আর জাবের বিদ্যুতের গতিতে তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো।

 একটাকে কনুইয়ের বাড়ি মেরে ফেলে দিলো হাসান!
জাবের আরেকজনের হাত মুচড়ে দিয়ে তার অস্ত্র ছিনিয়ে নিলো!
 একজনে পিস্তল তুলতে গেলে হাসান তার হাত ধরে এমন মোচড় দিলো যে হাড় ভেঙে গেল!

চারদিকে শত্রুরা হতভম্ব হয়ে গেল।

এতক্ষণ তারা ভেবেছিল হাসান আর জাবের সহজ শিকার, কিন্তু এখন তারা বুঝতে পারলো—তাদের সামনে কোনো সাধারণ মানুষ নেই, বরং সত্যের সৈনিকরা দাঁড়িয়ে আছে!

শেষ মুহূর্তের হুমকি

তাদের নেতা দাঁতে দাঁত চেপে বলল, "তোমরা হয়তো আজ কিছুটা সফল হলে, কিন্তু সত্যের পথ খুব সহজ নয়! আমরা আবার ফিরে আসবো!"

হাসান তার বন্দুকের নল নেতার কপালে ঠেকিয়ে দিলো।

"তোমরা যতই ফিরে আসো, আমরা ততবার তোমাদের তুলাধুনা করবো!"

নেতার চোখে ভয় ফুটে উঠলো…

(চলবে…)



পর্ব ৩৪: শেষ রক্ষার লড়াই (২য় অংশ)

শত্রুরা একে একে মাটিতে লুটিয়ে পড়ছে। হাসান আর জাবের দুজনেই বিদ্যুতের গতিতে যুদ্ধ করছে।

শত্রুর চক্রান্ত

হঠাৎ পাশের গলির অন্ধকার থেকে কয়েকজন মুখোশধারী বেরিয়ে এলো। তাদের হাতে আধুনিক অস্ত্র!

"তোমরা হয়তো আমাদের কিছু লোককে হারিয়েছো, কিন্তু এবার পালাতে পারবে না!"

তারা চারপাশ থেকে হাসান ও জাবেরকে ঘিরে ফেললো।

জাবের নিচু গলায় বলল, "এরা সংখ্যায় বেশি, এবার আমাদের চালাকি দেখাতে হবে!"

হাসান দ্রুত চারপাশ লক্ষ করলো। পাশে একটা ভাঙা ট্রাক পড়ে আছে, কিছু কাঠের বাক্সের স্তূপও আছে।

প্রতিশোধের আগুন

হঠাৎ হাসান গর্জে উঠলো, "আল্লাহর নামে লড়াই করো!"

সে দ্রুত নিচু হয়ে পাশের একটা ইট তুলে নিয়ে সামনে থাকা একজনের মাথায় সজোরে আঘাত করলো! লোকটা সাথে সাথে লুটিয়ে পড়লো।

জাবেরও এক ঝটকায় এক শত্রুর বন্দুক কেড়ে নিলো এবং তার হাঁটুতে এমনভাবে লাথি মারলো যে লোকটা চিৎকার দিয়ে মাটিতে পড়ে গেল!

বাকি শত্রুরা হতভম্ব হয়ে গেল!

হাসান আর জাবের তখন পাল্টা হামলা শুরু করলো।

হাসান একটা লাঠি তুলে নিয়ে সামনে থাকা দুজনের পায়ে মেরে ফেলে দিলো!
জাবের একটা ইট দিয়ে এক শত্রুর মাথায় আঘাত করলো, রক্ত ছিটকে পড়লো!
শত্রুদের মধ্যে যারা বন্দুক তুলতে চাইলো, তাদের হাত ধরে মোচড় দিয়ে অস্ত্র ছিনিয়ে নিলো হাসান!

চারপাশে শুধু ধ্বংস আর চিৎকার!

শত্রুর প্রধানের ভয়

নেতা এবার আতঙ্কিত হয়ে পড়লো।

"এরা মানুষ নাকি শয়তান!"

সে দ্রুত পালানোর চেষ্টা করলো, কিন্তু জাবের সামনে এসে তার পথ আটকে দিলো।

"আজকে তোদের পালানোর রাস্তা নেই!"

নেতা এবার হাঁটু গেড়ে বসে পড়লো।

"দয়া করো! আমাদের ছেড়ে দাও!"

হাসান এক ধাপ সামনে এগিয়ে এসে বলল,

"যারা নিরপরাধ মানুষের ওপর হামলা চালায়, তাদের জন্য কোনো দয়া নেই!"

তারপর সে নেতার কলার চেপে ধরলো…

(চলবে…)



পর্ব ৩৪: শেষ রক্ষার লড়াই (৩য় অংশ)

নেতার মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। সে কাঁপতে কাঁপতে বলল,

"দয়া করো! আমি শুধু আদেশ পালন করেছি!"

জাবের তার কলার ধরে এক ধাক্কায় মাটিতে ফেলে দিলো।

"তোর মতো কাপুরুষরা সবসময় অন্যের আদেশের আড়ালে লুকায়। কিন্তু আজ কোনো ক্ষমা নেই!"

নেতা এবার করুণ স্বরে বলল,

"আমি যা জানি, সব বলব! শুধু আমাকে ছেড়ে দাও!"

অন্ধকার ষড়যন্ত্র ফাঁস হলো

হাসান এগিয়ে এসে তার দিকে তাকিয়ে বলল,

"তাহলে বল, কার আদেশে এসব করছিলে?"

নেতা ঢোঁক গিলে বলল,

"আমাদের আসল নেতা একজন বড় ব্যক্তি, সে এত সহজে ধরা দেবে না। আমরা শুধু তার সৈনিক!"

"নাম বল! সে কোথায়?" হাসান গর্জে উঠলো।

নেতা কিছু বলার আগেই একটা গুলির শব্দ শোনা গেল!

বিশ্বাসঘাতকের শেষ পরিণতি

হাসান দ্রুত সরে গেল, কিন্তু নেতা পড়ে গেল রক্তের স্রোতে। দূর থেকে কেউ একজন তাকে গুলি করেছে!

"আমাদের থেকে গোপন তথ্য বের করার আগেই শত্রুরা নিজেদের লোককে মেরে ফেলছে!" জাবের চিৎকার করে উঠলো।

হাসান দ্রুত আশেপাশে নজর দিলো। অন্ধকারের মধ্যে ছায়ার মতো কেউ একজন দ্রুত পালিয়ে যাচ্ছে!

"ওকে ধরতে হবে!" হাসান বলে দৌড় দিলো।

জাবেরও পেছনে দৌড়াল।

অন্ধকারে ধাওয়া

শত্রু তাদের ধরা পড়তে দিতে চায় না। সে রাস্তার গলি দিয়ে পালাচ্ছে, কিন্তু হাসান আর জাবের আগুনের মতো তেড়ে আসছে।

একটা দেয়ালের সামনে এসে শত্রু বুঝতে পারলো, তার আর পালানোর রাস্তা নেই!

সে দ্রুত বন্দুক তুলতে চাইল, কিন্তু…

জাবের বিদ্যুতের গতিতে লাফিয়ে উঠে তার হাতে প্রচণ্ড আঘাত করলো! বন্দুকটা দূরে ছিটকে পড়লো।

হাসান এবার সামনে এসে বলল,

"তোরও কি নেতার মতো শেষ হবে, নাকি সব সত্য বলে দিবি?"

শত্রুর চোখে ভয়!

নতুন রহস্যের উন্মোচন

শত্রু নিঃশ্বাস নিতে নিতে বলল,

"আমি কিছুই জানি না, আমাকে ছেড়ে দাও!"

জাবের গর্জে উঠলো,

"মিথ্যা বলিস না!"

হাসান ধমক দিলো,

"আমরা সত্য না জানা পর্যন্ত তোকে ছাড়ছি না!"

শত্রুর চোখে ভয় জমে গেল।

কিন্তু সে কিছু বলার আগেই…

পেছন থেকে এক গাড়ি দ্রুত এসে থামলো, আর…

নতুন বিপদ অপেক্ষা করছে…

(চলবে…)


পর্ব ৩৪: শেষ রক্ষার লড়াই (৪র্থ অংশ)

গাড়ির দরজা খুলেই একদল মুখোশধারী লোক বেরিয়ে এলো। তাদের হাতে ভারী অস্ত্র!

"কাউকে ছেড়ে দিও না!"

তারা গুলি চালাতে শুরু করলো!

মৃত্যুর ফাঁদ থেকে মুক্তির চেষ্টা

হাসান আর জাবের দ্রুত পাশের দেয়ালের আড়ালে লুকিয়ে পড়লো। বুলেটগুলো তাদের পাশ দিয়ে শিসিয়ে চলে গেল।

জাবের বলল,

এরা তো আমাদের শেষ করে দিতে এসেছে!"

হাসান ঠান্ডা গলায় বলল,

"আমরাও তৈরি আছি!"

শত্রুর বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ

জাবের তার কোমর থেকে ছুরি বের করে ছুড়ে মারলো একজন মুখোশধারীর গলায় বিঁধলো!

হাসান দ্রুত পাশের লোহার পাইপটা তুলে নিয়ে আঘাত করলো আরেকজনের মাথায়—সে সাথে সাথে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো!

তারা ধীরে ধীরে শত্রুদের সংখ্যা কমাতে থাকলো।

আসল নেতার আবির্ভাব

শত্রুরা বুঝলো, সাধারণ গুন্ডাদের দিয়ে হাসান-জাবেরকে থামানো যাবে না।

তখনই…

একজন লম্বা, কালো কোট পরা ব্যক্তি গাড়ি থেকে নামলো।

তার চোখে ভয়ানক দৃষ্টি!

"তোমরা সত্যিই আমাদের জন্য ঝামেলা তৈরি করেছো। এখন সময় শেষ!"

সে তার বন্দুক তুললো…

শেষ মুহূর্তের চমক

হঠাৎ…

একটা তীক্ষ্ণ শব্দ শোনা গেল!

কোথা থেকে যেন একটা তীর এসে সেই ব্যক্তির হাতে বিদ্ধ হলো!

সে চিৎকার করে বন্দুক ফেলে দিলো!

হাসান তাকিয়ে দেখলো—একজন অচেনা লোক ছাদের উপর দাঁড়িয়ে আছে, হাতে ধনুক!

সে বলল,

"এই লড়াই এখানে শেষ হয়নি!"

নতুন রহস্যের শুরু…

কে এই ব্যক্তি?

সে কি হাসানদের বন্ধু নাকি নতুন শত্রু?

আর এই কালো কোট পরা ব্যক্তি—তার পিছনের আসল শক্তি কে?

সবকিছু আরও গভীর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দিচ্ছে…

(চলবে…)


লেখক মাওলানা মোঃ সাকিব


রবিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৫

পর্ব ৩৩: সত্যের পথে বিপদ

 পর্ব ৩৩: সত্যের পথে বিপদ (১ম অংশ)

অন্ধকার রাতে দুজন তরুণ শত্রুদের হাত থেকে পালানোর চেষ্টা করছে, দূরে রহস্যময় একজন মুখোশধারী দাঁড়িয়ে আছে।
"যখন তুমি সত্যের পথে চলবে, তখন বাধা আসবেই। কিন্তু তোমার ঈমান যদি দৃঢ় হয়, তাহলে আল্লাহর সাহায্য অবশ্যই আসবে।"


সন্ধ্যার অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে। হাসান ও জাবের দ্রুত পা চালিয়ে নির্জন পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছে। ধ্বংসপ্রাপ্ত মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর থেকেই মনে হচ্ছে, কেউ তাদের অনুসরণ করছে।


 "আমরা কি নিরাপদ?" জাবের ফিসফিস করে জানতে চাইল।


হাসান পেছনে তাকিয়ে বলল, "কখনোই পুরোপুরি নিরাপদ নই। কিন্তু আমাদের থামলে চলবে না।"


শত্রুর ছায়া


হঠাৎ একটি গাড়ির আলো ঝলসে উঠলো। তাদের পথ আটকে দাঁড়ালো কালো রঙের একটি ভ্যান।


"তারা আমাদের খুঁজে পেয়েছে!" রাশেদ আতঙ্কে বলল।


দরজা খুলে কয়েকজন কালো পোশাকধারী লোক বের হলো। একজন বলল—


 "তোমরা যা জানো, সেটা জানার কথা ছিল না! আমাদের সাথে চলো, নয়তো ফল ভালো হবে না!"


হাসান আর জাবের একে অপরের দিকে তাকালো। পালানোর সুযোগ আছে কি? নাকি সত্যের সন্ধান এখানেই থেমে যাবে?


(চলবে…)



পর্ব ৩৩: সত্যের পথে বিপদ (২য় অংশ)

হাসান দ্রুত পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করলো। পালানোর সুযোগ খুব কম, কিন্তু একেবারে হাল ছেড়ে দেওয়া যাবে না।

জাবের ফিসফিস করে বলল, "আমরা কী করবো?"

হাসান গভীর শ্বাস নিলো, "একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে, তারপর সুযোগ বুঝে দৌড় দেবো!"

হঠাৎ আক্রমণ

একজন কালো পোশাকধারী হাসানের দিকে এগিয়ে এলো। মুহূর্তের মধ্যে সে তার শক্ত হাতে হাসানকে ধরে ফেলতে চাইল।

কিন্তু হাসান প্রস্তুত ছিল। সে দ্রুত এক ধাক্কায় লোকটিকে দূরে সরিয়ে দিলো। একই সময়ে জাবের পাশের এক ব্যক্তির হাত থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলো।

বিপদের ঘেরাটোপ

তাদের প্রতিরোধে কালো পোশাকধারীরা হতভম্ব হয়ে গেল। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর হয়ে উঠলো।

দূর থেকে একটা কণ্ঠ শোনা গেল—

"ওদের যেতে দিও না!"

আরও কয়েকজন অস্ত্রধারী লোক ছুটে এলো। এবার পালানো সহজ হবে না!

(চলবে…)



পর্ব ৩৩: সত্যের পথে বিপদ (৩য় অংশ)

চারপাশে যেন মৃত্যু ঘনিয়ে আসছে। অন্ধকার রাতে সেই কালো পোশাকধারীরা তাদের ঘিরে ফেলেছে। হাসান আর জাবেরের পলায়নের শেষ সুযোগটাও মুছে যেতে লাগলো।

শূন্যে ছুটে চলা গুলি

তোমরা যদি দৌড়ানোর চেষ্টা করো, তবে এখানেই মরতে হবে!" এক অস্ত্রধারী ঠান্ডা গলায় বলল।

পরিস্থিতি ভয়ংকর হয়ে উঠলো। হাসান বুঝতে পারলো, এখন তাদের পালানোর কোনো সুযোগ নেই।

জাবের ফিসফিস করে বলল, "আমরা কি আত্মসমর্পণ করবো?"

"কখনো না!" হাসান কঠিন স্বরে বলল। "সত্যের পথ কখনো এত সহজ হয় না।"

তারা পালানোর পথ খুঁজতে লাগলো, কিন্তু চারপাশ থেকে অস্ত্র তাক করা। তাদের দিকেই এগিয়ে আসছে কয়েকজন।

হঠাৎ সাহায্য!

ঠিক তখনই, অন্ধকার থেকে রহস্যময় এক ছায়া বেরিয়ে এলো।

কালো মুখোশধারী একজন, হাতে চকচকে ছুরি।

"ওদের ছেড়ে দাও!"

কণ্ঠটা যেন বজ্রের মতো ধ্বনিত হলো, আর পরের মুহূর্তে সে বিদ্যুতের গতিতে হামলা চালালো!

কালো পোশাকধারীরা হতভম্ব হয়ে গেল। হাসান আর জাবের একে অপরের দিকে তাকালো।

কে এই ব্যক্তি? সে কি শত্রু নাকি তাদের রক্ষাকারী?

(চলবে…)


পর্ব ৩৩: সত্যের পথে বিপদ (৪র্থ অংশ)

রহস্যময় মুখোশধারীর হামলায় কালো পোশাকধারীরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়লো। মুহূর্তের সুযোগে হাসান আর জাবের দ্রুত পেছনের সরু গলির দিকে দৌড় দিলো।

"ওরা পালাচ্ছে! থামাও ওদের!"

পেছন থেকে গুলি ছুটে এলো! হাসান আর জাবের কোনোমতে একটা পরিত্যক্ত ভবনের আড়ালে লুকালো।

বিপদের নতুন ধাপ

"এটা কী হলো, হাসান? ওই লোক আমাদের সাহায্য করলো কেন?" জাবের হতবাক হয়ে বলল।

মাহির দ্রুত শ্বাস নিতে নিতে বলল, "জানি না, কিন্তু আমরা এখনো নিরাপদ নই। আমাদের এখান থেকে বের হতে হবে!"

হঠাৎই পেছনে একটা কণ্ঠ ভেসে এলো—

"তোমাদের সত্য জানতেই হবে, তাই আমি এসেছি।"

হাসান আর জাবের তাকিয়ে দেখলো, সেই মুখোশধারী দাঁড়িয়ে আছে।

"তুমি কে?" হাসান জিজ্ঞেস করলো।

লোকটা ধীরে ধীরে মুখোশ খুললো…

আর মুহূর্তেই হাসানের চোখ বিস্ময়ে ছানাবড়া হয়ে গেল!

"তুমি?! এটা কীভাবে সম্ভব?"

জাবের হতবাক হয়ে বলল, "আমরা কি স্বপ্ন দেখছি?"

সত্যের পর্দা এখনই উঠতে চলেছে… কিন্তু এটা কি হাসানের জন্য আরও বড় বিপদের শুরু?

(চলবে…)