🕯️ উপন্যাস: অন্ধকারের মুখে আলো
![]() |
যেখানে অপবাদ উঠে, সেখানে সত্য দাঁড়িয়ে জবাব দেয়। ইতিহাস, কুরআন ও যুক্তির আলোকছায়ায় নবীজির (সা.) বিয়ে নিয়ে স্পষ্ট জবাব।" |
✦ ১ম অংশ: তর্কের আগুন
হলরুমজুড়ে মানুষের ভিড়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যাওয়া এক বিতর্কিত বক্তা আজ মঞ্চে। নিজেকে “যুক্তিবাদী” দাবি করা সেই ব্যক্তি—নাম তার আসাদ নূর, একজন সুপরিচিত ধর্মবিরোধী বক্তা। তার কথায় আগুন আছে, তর্কে চাতুর্য আছে, কিন্তু ইমান নেই।
মঞ্চের পেছনে লেখা—
“তর্ক সভা: ধর্ম বনাম যুক্তি”
সবাই জানে, আজ একটা অগ্নিপরীক্ষা হতে যাচ্ছে।
🎤 মাইক্রোফোন হাতে নাস্তিক আসাদ নূর
– "প্রিয় বন্ধুরা, আজকের সভায় আমরা মুখোমুখি হবো কেবল অন্ধ বিশ্বাসের, অন্ধ আনুগত্যের! যাদের ধর্মগ্রন্থে একজন পঞ্চম শ্রেণির শিশুকে বিবাহ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে, তারা নাকি আমাদের নৈতিকতার পাঠ পড়াবে!"
লোকজন হো হো করে হাসে।
– "আমি প্রশ্ন রাখছি! মুহাম্মাদ (সা.) নাকি ৬ বছর বয়সী আয়েশা (রা.)-কে বিয়ে করেছিলেন। কীভাবে একজন ৫২ বছর বয়সী পুরুষ, নিজেকে নবী দাবি করে, একজন শিশুকে বিয়ে করতে পারে? এটাই কি তাঁদের ধর্মের নীতি?"
হলঘর মুহূর্তেই উত্তেজনায় ফেটে পড়ে। কেউ চিৎকার করে, কেউ হতবাক হয়ে চুপসে যায়। মুসলিমদের মাঝে কেমন যেন একটা অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে।
🎙️ সঞ্চালক বলেন:
– "আমরা চাইবো ইসলামী পক্ষ থেকে কেউ উত্তর দিন।"
👤 পরিচয়হীন এক আলেম উঠে দাঁড়ান
সাদা পাগড়ি, লম্বা জোব্বা, শান্ত কিন্তু দৃঢ় চেহারা। চোখে অদ্ভুত এক দীপ্তি।
তিনি নাম জানান—
" মুফতি খাইরুল ইসলাম নোমানী।"
তিনি ধীরে মঞ্চে আসেন। মঞ্চে উঠে প্রথমে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম” বলেন।
তারপর বলেন:
– “আজকের এই অস্থির সময়ে, আমি যুক্তির উত্তর যুক্তি দিয়ে, অথচ শান্তভাবে দিতে চাই। আমি কাউকে অপমান করতে আসিনি। বরং সত্যকে তুলে ধরতে এসেছি, যেন মানুষ বুঝতে পারে, কে আলোর পক্ষে আর কে অন্ধকারে।”
নাস্তিক আসাদ নুর তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে:
– "আপনি সত্য বলতে চান? তাহলে প্রথমে বলুন, ৬ বছর বয়সী আয়েশা নামের শিশুটিকে বিয়ে করে আপনার নবী কী শিক্ষা দিলেন?"
চারদিকে নিস্তব্ধতা। সবাই তাকিয়ে আছে সেই আলেমের দিকে। তিনি একটু দাঁড়ালেন। তারপর মঞ্চ থেকে নেমে লোকজনের মাঝে চলে গেলেন।
তিনি বললেন:
– “তোমাদের মঞ্চে আলো আছে, মাইকে আওয়াজ আছে, কিন্তু মনে কি সত্য জানার আগ্রহ আছে? সত্য বলতে চাইলে আবেগ নয়, চাই প্রমাণ ও প্রেক্ষাপট।”
তিনি আবার মঞ্চে ফিরে এসে বললেন—
– “আমি এখন কিছু জিনিস বলবো। কিন্তু শর্ত একটাই: প্রশ্ন করার অধিকার রাখবেন, তবে অপমান নয়। সত্যের কথা আসুক, দলিল সহ।”
মঞ্চে ছড়িয়ে পড়ে রহস্যঘন নীরবতা
মুফতি খাইদুল ইসলাম নোমানী বলেন:
– “নবীজির (সা.) জীবনযাপন ছিল সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন, সবচেয়ে দয়ালু। তাঁর বিয়ে, তাঁর যুদ্ধ, তাঁর আহ্বান—সব কিছুই ছিল মানবজাতির মুক্তির লক্ষ্যে। যাঁকে আল্লাহ প্রশংসা করে বলেন—
وَإِنَّكَ لَعَلَىٰ خُلُقٍ عَظِيمٍ
‘তুমি তো মহান চরিত্রের অধিকারী।’ (সূরা কলম: ৪)”
– “তুমি এক আয়েশার (রা.) বয়সকে প্রশ্ন করছো, কিন্তু ইতিহাসকে বিশ্লেষণ করো। তখনকার আরবে বিয়ের বয়স কি আমাদের মতো ১৮ বছর ছিল? তখন ১২ বছর বয়সেই মেয়েরা সন্তান জন্ম দিত। মানুষ বালেগ হতো শারীরিক ও মানসিকভাবে অল্প বয়সে। সুতরাং, সেই সময়ের প্রেক্ষাপটে বিষয়টি অস্বাভাবিক ছিল না।”
নাস্তিক আসাদ নুর একটু নড়ে ওঠে। কিন্তু চুপচাপ।
মুফতি খাইরুল ইসলাম নোমানী আরো বলেন—
– “আর আয়েশা (রা.)-র বয়স নিয়ে ঐতিহাসিক মতপার্থক্যও আছে। অনেক ইতিহাসবিদ তাঁর বয়স ১৬-১৯ বছরের মধ্যেও বলেছেন। আয়েশা (রা.) নিজেও বলেন—
‘নবীজিকে আমি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতাম।’
তুমি যদি তার জীবন পড়ো, দেখবে সে কোনো অভিযোগ তো করেইনি, বরং জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তিনি নবীজির প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার কথা বলেছেন।”
🔚 ১ম অংশ শেষ
মঞ্চের উত্তাপ একটু কমে আসে। নাস্তিক আসাদ নুরের মুখ থমথমে। জনতা হতবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে সেই আলেমের দিকে।
নবীজির (সা.) জীবন ইতিহাস নয়—এক জীবন্ত আলোর উৎস—এই কথাটি যেন আজ কিছু মানুষের মনে দাগ কাটে।
✅ পরবর্তী অংশে কী থাকবে?
২য় অংশে শুরু হবে আলেমের দলিলভিত্তিক জবাব, যেখানে থাকবে:
বাল্যবিবাহের ইতিহাস
বিভিন্ন সংস্কৃতিতে বয়সের ব্যাখ্যা
ইসলামের বিধান ও পরিপক্বতার সংজ্ঞা
নাস্তিক আসাদ নূরের প্রতিউত্তরে ইসলামিক দৃষ্টিকোণ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। অনুগ্রহ করে শালীন ভাষায় কমেন্ট করুন।"