GDPR সম্মতি

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করার জন্য আমরা কুকি এবং আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করি। আপনার সম্মতি থাকলে আমরা এই তথ্যগুলি সংগ্রহ করতে পারি। আপনি চাইলে আপনার সম্মতি দিতে পারেন অথবা নীচের পছন্দগুলি পরিবর্তন করতে পারেন। সম্মতি দিন | পছন্দ পরিবর্তন করুন

শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫

নাস্তিকের প্রশ্নের জবাবে ঈমানের আলো | খণ্ড ১০

 নাস্তিকের চ্যালেঞ্জ ও ইসলামের জবাব | খণ্ড ১০ | প্রথম অংশ

আলমাছ ও শায়খের ইসলামিক আলোচনা, আত্মা ও ঈমান নিয়ে তর্ক, ইসলামিক গল্প সিরিজ
“যে নিজেকে জানে, সে তার রবকে চিনে।” — শায়খ আলমাছকে আল্লাহকে চেনার দাওয়াত দিচ্ছেন।


শিরোনাম: "তুমি যদি বলো আল্লাহ আছেন, তবে তিনি কোথায়?"


আলমাছ এবার একটু ঠোঁটে বাঁকা হাসি টেনে বলল,

"তুমি তো খুব বড় আলেম, ঠিক আছে, আমি এবার এমন একটা প্রশ্ন করব যার জবাব দিলে মানব, তুমি সত্যের পথে আছো। তুমি যদি বলো আল্লাহ আছেন, তবে তিনি কোথায়? কিসে বসে আছেন? তাঁর অবস্থান কোথায়? চোখে দেখি না, ছুঁয়ে পাই না, তাহলে তুমি কিসের প্রমাণ দাও?"


চারপাশে নিস্তব্ধতা। কয়েকজন মুচকি হাসছে। কেউ কেউ আলমাছের কথায় কৌতূহলী হয়ে তাকিয়ে আছে। এই প্রশ্নটি বহুবার বহু জায়গায় তুলেছে আলমাছ। অধিকাংশ মানুষ কেবল চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে, তারপর চুপ করে যায়।


কিন্তু এই আলেম শায়খ জনাব আব্দুর রাজ্জাক চুপ করলেন না।


তিনি মাথা নিচু করে কুরআনের তিলাওয়াত শুরু করলেন।

 "لَا تُدْرِكُهُ ٱلْأَبْصَـٰرُ وَهُوَ يُدْرِكُ ٱلْأَبْصَـٰرَ ۖ وَهُوَ ٱللَّطِيفُ ٱلْخَبِيرُ"

“চোখ তাঁকে ধরতে পারে না, কিন্তু তিনি চোখকে ধরতে পারেন। তিনি অতি সূক্ষ্ম ও সবকিছুর খবর রাখেন।”

(সূরা আন'আম, আয়াত ১০৩)


তারপর বললেন,

"আলমাছ, তুমি কি তোমার চেতনা দেখতে পাও? তুমি কি তোমার মনের অনুভূতিগুলো হাত দিয়ে ছুঁতে পারো? পারো না, কিন্তু এগুলোর অস্তিত্বে তুমি বিশ্বাস করো। কেন? কারণ তুমি তার প্রভাব অনুভব করো। ঠিক তেমনি করে আল্লাহর অস্তিত্বকে দেখা যায় না, কিন্তু তাঁর সৃষ্টি, নিয়ন্ত্রণ ও নিয়মে প্রতিদিন আমরা ডুবে থাকি।"


আলমাছ এবার একটু থমকাল। শায়খ আব্দুর রাজ্জাক আবার বললেন,

"আল্লাহ 'কোথায়'—এই প্রশ্নে সীমাবদ্ধ নন। তিনি স্থান-কাল-পাত্র সৃষ্টির আগে থেকেই আছেন। স্থান তাঁর জন্য নয়, স্থান তো তাঁরই সৃষ্টি!"


চোখে চোখ রেখে শায়খ বললেন,

"আল্লাহর অবস্থান বোঝার আগে আল্লাহর মাহাত্ম্য বুঝতে শিখ আলমাছ!"


(চলবে…)



নাস্তিকের চ্যালেঞ্জ ও ইসলামের জবাব | খণ্ড ১০ | দ্বিতীয় অংশ

শিরোনাম: "যিনি স্থান ও সময়ের স্রষ্টা, তাঁকে 'কোথায়' দিয়ে বোঝা যায় না"

আলমাছ একটু ঘাবড়ে গেলেও নিজেকে সামলে নিল, বলল,
“আচ্ছা, ঠিক আছে। তুমি বললে আল্লাহ স্থান-কাল সৃষ্টির আগেই ছিলেন। কিন্তু তার মানে কি তিনি এখন আর কোথাও নেই? যদি আল্লাহই সত্য হন, তাহলে তিনি কোথাও থাকবেন না কেন?”

শায়খ আব্দুর রাজ্জাক হেসে বললেন,
 “আলমাছ, তুমি ভুল জায়গায় আল্লাহকে খুঁজছ। তুমি খুঁজছ একটা ঘর, একটা দিক, একটা আকাশ—যেন আল্লাহ একটা বস্তু! অথচ আল্লাহ তো বলেছেন:

 "هُوَ ٱلۡأَوَّلُ وَٱلۡآخِرُ وَٱلظَّاهِرُ وَٱلۡبَاطِنُۖ وَهُوَ بِكُلِّ شَيۡءٍ عَلِيمٌ"
“তিনি শুরু, তিনি শেষ, তিনি প্রকাশ্য, তিনি অদৃশ্য, এবং তিনি সর্ববিষয়ে জ্ঞাত।”
(সূরা হাদীদ, আয়াত ৩)


“তুমি যাঁকে চোখ দিয়ে দেখতে চাও, তিনি তো তোমার চোখকেও সৃষ্টি করেছেন। তিনি বস্তু নন, তিনি সৃষ্ট নন, বরং তিনিই সবকিছুর স্রষ্টা। যিনি সময় ও স্থান সৃষ্টি করেছেন, তিনি নিজে সৃষ্ট জিনিসের মধ্যে কিভাবে সীমাবদ্ধ হবেন?”

আলমাছ এবার কিছুটা চুপসে গেল। শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বললেন,
“তুমি যদি আল্লাহর অস্তিত্ব জানতে চাও, তাহলে তোমার হৃদয়ের দরজাকে খোলো, দুনিয়ার প্রতিটি কণায় তাঁর নিদর্শন খুঁজো। তিনি চুপ থাকেন না, বরং তাঁর সৃষ্টি তোমাকে ডাকছে প্রতিনিয়ত। তুমি শুনছো না।”

শায়খ আব্দুর রাজ্জাক একটি পাতা তুলে দেখালেন। “এ পাতাটাও বলে, কেউ আছো, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। বাতাস বলছে, আমি আপনাআপনি আসিনি। সূর্য বলছে, আমি নিখুঁত নিয়মে উঠি কারণ কেউ আমাকে উঠায়। সে 'কেউ' হলেন আল্লাহ।”

আলমাছ এবার মাথা নিচু করল। শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বললেন,
“আলমাছ, প্রশ্ন করা দোষের নয়, কিন্তু প্রশ্নের পেছনে অহংকার নিয়ে আসা সর্বনাশের। তুমি আল্লাহকে অস্বীকার করো কারণ তুমি তাঁকে বুঝতে পারো না। কিন্তু পৃথিবীর বহু কিছু তুমি বোঝ না, তবুও বিশ্বাস করো। তাহলে আল্লাহর অস্তিত্বে অবিশ্বাস কেন?”

(চলবে…)


নাস্তিকের চ্যালেঞ্জ ও ইসলামের জবাব | খণ্ড ১০ | তৃতীয় অংশ

শিরোনাম: “যে নিজেকে জানে, সে তার রবকে চিনে”

আলমাছ বসে গেল। তার দৃষ্টি এবার আর আগের মতো কঠিন নয়। একটু গম্ভীর আর চিন্তামগ্ন। শায়খ আব্দুর রাজ্জাক ধীরে ধীরে বললেন,

 “আলমাছ, তুমি নিজের দিকে একবার তাকাও। তুমি কে? কোথা থেকে এসেছো? তোমার শরীরের প্রতিটি কোষ, প্রতিটি স্নায়ু, হৃদয়ের স্পন্দন—সবকিছু তোমাকে প্রশ্ন করছে, ‘তুমি কিভাবে এমন নিখুঁত হলে? কে তোমাকে এমন করলো?’”

আলমাছ কিছু বলার আগেই শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বলতে থাকলেন—

“পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে জ্ঞানী প্রফেসরও নিজের রুহ (আত্মা) বোঝে না। অথচ সেই আত্মা দিয়েই সে চিন্তা করে, প্রশ্ন করে, বিশ্বাস করে। আল্লাহ বলেন:

 "وَيَسۡـَٔلُونَكَ عَنِ ٱلرُّوحِۖ قُلِ ٱلرُّوحُ مِنۡ أَمۡرِ رَبِّي..."
‘তারা তোমার নিকট রূহ (আত্মা) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বল, আত্মা আমার প্রভুর আদেশের বিষয়।’
(সূরা ইসরা, আয়াত ৮৫)



“আলমাছ, তুমি যদি নিজেকে জানতে, তাহলে আল্লাহকে চিনতে পারতে। কারণ রাসূল (সা.) বলেন:

 "مَنْ عَرَفَ نَفْسَهُ فَقَدْ عَرَفَ رَبَّهُ"
‘যে নিজেকে চেনে, সে তার রবকে চেনে।’


আলমাছ এবার মুখ তুলে বলল,
“তাহলে আমি কিভাবে আল্লাহকে চিনব? আমি তো চোখে দেখতে চাই।”

শায়খ আব্দুর রাজ্জাক মৃদু হাসলেন।
“তুমি কি ভালোবাসাকে চোখে দেখেছো? কিন্তু বিশ্বাস করো, তাই না? আল্লাহকে চোখে দেখা যায় না, কিন্তু হৃদয় দিয়ে অনুভব করা যায়। যখন তুমি নামাজে দাঁড়াও, কুরআন পড়ো, চোখে পানি আসে—সেই অনুভবটাই আল্লাহর সাক্ষাৎ।”

আলমাছ বলল,
“আমি চেষ্টা করব। কিন্তু আমি খুব দ্বিধায় থাকি…”

শায়খ আব্দুর রাজ্জাক শান্তভাবে বললেন,
“দ্বিধা থাকাটাই প্রমাণ যে তুমি খুঁজতে চাও। আল্লাহ বলেন:

 "وَٱلَّذِينَ جَٰهَدُواْ فِينَا لَنَهۡدِيَنَّهُمۡ سُبُلَنَاۚ"
‘আর যারা আমার পথে চেষ্টা করে, অবশ্যই আমি তাদেরকে আমার পথ দেখাব।’
(সূরা আনকাবুত, আয়াত ৬৯)



“তুমি শুধু খোঁজো, দরজায় কড়াঘাত করো, দেখবে, আল্লাহ খুলে দিবেন।”

আলমাছ চুপ করে রইল। মনে যেন আলো ফুটে উঠেছে। একটা নতুন সূর্যোদয় যেন তার হৃদয়ের দিগন্ত ছুঁয়ে গেল…

(চলবে…)


লেখক মাওলানা মোঃ ছাকিব।


মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫

নাস্তিকের প্রশ্ন, বিজ্ঞানের সীমা ও ইসলামের যুক্তিভিত্তিক জবাব | (খণ্ড ৯)

 নাস্তিকের প্রশ্ন ও ইসলামের জবাব – খণ্ড ৯ (১ম অংশ)

আলেম ও নাস্তিকের যুক্তিপূর্ণ আলোচনা, যেখানে ইসলাম বিজ্ঞানের চেয়েও প্রগাঢ় যুক্তি তুলে ধরে।
যেখানে যুক্তি থেমে যায়, সেখানেই ঈমানের আলো জেগে ওঠে।


“তাওহিদ কি শুধু বিশ্বাস, না কি বৈজ্ঞানিক বাস্তবতা?”


আলমাছ এবার চুপচাপ। মুখে কোনো প্রশ্ন নেই, কিন্তু চোখে লুকানো দ্বন্দ্ব।

শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বুঝলেন—এবার সময় এসেছে ‘তাওহিদের’ গভীর ব্যাখ্যার।


শায়খ আব্দুর রাজ্জাক (শুরু করলেন):

"আলমাছ, তুমি তো বলেছিলে—'আমি বিজ্ঞান মানি, ধর্ম না।'

তাওহিদ কি তুমি শুধু বিশ্বাস বলেই উড়িয়ে দাও, নাকি যুক্তির জায়গা দিয়েও দেখেছো কখনো?"


আলমাছ (কিছুটা কণ্ঠ নিচু করে):

“তাওহিদ মানে তো, এক আল্লাহর বিশ্বাস। কিন্তু এটা তো কল্পনা। প্রমাণ কোথায়?”


শায়খ আব্দুর রাজ্জাক (হেসে):

“চলো তবে বিজ্ঞান দিয়েই বুঝি।”


তাওহিদ ও বিজ্ঞান – এক বিস্ময়কর সাদৃশ্য


শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বলেন:

“বিজ্ঞানের প্রতিটি শৃঙ্খলা একটি মূল নিয়ম মানে—একক সূত্র, একক সিস্টেম, একক সৃষ্টিকর্তা।

ফিজিক্সে যেমন 'Law of Conservation',

জেনেটিক্সে যেমন 'একক কোড'।

এই কসমিক ইউনিফর্মিটি প্রমাণ করে, গোটা বিশ্ব কোনো এলোমেলো বিস্ফোরণে নয়,

বরং একক সত্তার সুপরিকল্পনায় গঠিত।”


কুরআনের যুক্তি ও বিজ্ঞানের সমান্তরালতা


শায়খ আব্দুর রাজ্জাক আবৃত্তি করলেন:

أَفِي ٱللَّهِ شَكٌّ فَاطِرِ ٱلسَّمَـٰوَٟتِ وَٱلْأَرْضِ؟

“আল্লাহ সম্পর্কে কি কোনো সন্দেহ আছে? যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর স্রষ্টা?”

(সূরা ইব্রাহিম, আয়াত ১০)


আলমাছ এবার চুপ...

সে যেন শুনছে, ভাবছে, আবারো এক অজানা আলো তার ভেতরে ধাক্কা দিচ্ছে।


শায়খ আব্দুর রাজ্জাক:

“তাওহিদ কেবল এক বিশ্বাস নয়, বরং বিজ্ঞান ও যুক্তির পরম শেষ ঠিকানা—

যেখানে প্রতিটি সৃষ্টির সূচনা এক মহান পরিকল্পনার ছোঁয়ায়।”


(চলবে… খণ্ড ৯: দ্বিতীয় অংশে…)


নাস্তিকের প্রশ্ন ও ইসলামের জবাব – খণ্ড ৯ (২য় অংশ)


“যেখানে বিজ্ঞান থেমে যায়, সেখানেই আল্লাহর অস্তিত্ব জেগে ওঠে”


আলমাছ কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল:

“বুঝলাম, আপনার কুরআনের আয়াতগুলো একধরনের দর্শন বহন করে।

তবে ধর্মের চেয়ে বিজ্ঞান তো বেশি এগিয়ে—এটা তো সত্য!

তাওহিদের ধারণা যদি বৈজ্ঞানিক হয়, তাহলে আজকের বিজ্ঞান কেন আল্লাহর কথা বলেনা?”


শায়খ আব্দুর রাজ্জাক ধীরে বললেন:

“আধুনিক বিজ্ঞান সত্যকে খোঁজে, কিন্তু সব সত্যকে মানতে প্রস্তুত নয়।

বিজ্ঞান আবিষ্কার করে ‘কেন’, আর ধর্ম বলে ‘কার জন্য’।

দুইয়ের কাজ আলাদা।

তুমি কি চাও—মাইক্রোস্কোপ দিয়ে আত্মা দেখতে? বা টেলিস্কোপে আল্লাহর চেহারা?”


আলমাছ চুপ। কণ্ঠ স্তব্ধ।


সৃষ্টিজগতের নিখুঁত ভারসাম্য – কুরআনের চ্যালেঞ্জ


শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বললেন:

“আলমাছ, তুমি তো বিজ্ঞানের ছাত্র। তাহলে বলো—এ বিশ্বে সবকিছু কি এলোমেলো?”


আলমাছ:

“না, বিশ্ব তো নিখুঁতভাবে চলে।”


শায়খ আব্দুর রাজ্জাক:

“তবে শোন আল্লাহ কী বলছেন—”


ٱلَّذِى خَلَقَ سَبْعَ سَمَـٰوَٟتٍۢ طِبَاقًۭا ۖ مَّا تَرَىٰ فِى خَلْقِ ٱلرَّحْمَـٰنِ مِن تَفَـٰوُتٍۢ ۖ فَٱرْجِعِ ٱلْبَصَرَ هَلْ تَرَىٰ مِن فُطُورٍۢ

“তিনি সৃষ্টি করেছেন সাত আকাশ স্তরে স্তরে।

রহমানের সৃষ্টিতে কোনো ত্রুটি দেখতে পাও কি?

তুমি চোখ ফেরাও, ত্রুটি খুঁজে পাও কিনা!”

(সূরা আল-মুলক, আয়াত ৩)


শায়খ আব্দুর রাজ্জাক জোরে বললেন:

“আলমাছ, তুমি নিজেই বলেছো—বিশ্ব নিয়মে চলে।

এই নিয়ম কোথা থেকে এলো?

তুমি কি কোনো ‘নিয়মদাতা’ ছাড়া নিয়ম কল্পনা করতে পারো?”


একটি জটিল উদাহরণ: DNA ও কোডিং সিস্টেম


শায়খ ব্যাখ্যা করলেন:

“মানব DNA-তে চারটি বেস—A, T, C, G—এই কোড ৩ বিলিয়নেরও বেশি অক্ষরের মতো।

এটি একটি জটিল প্রোগ্রাম, যেন একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার লিখেছেন!


এখন তুমি বলো—এই প্রোগ্রামটি কি এমনিতেই তৈরি হয়েছে?

না কি কোনো ‘Programmer’ আছেন যিনি জানেন কাকে কেমন বানাতে হবে?”


আলমাছ ধীরে বলল:

“বিজ্ঞানের ভাষায়, এটা তো 'র‍্যান্ডম মিউটেশন'...”


শায়খ আব্দুর রাজ্জাক হেসে বললেন:

“বাহ! র‍্যান্ডম মিউটেশন কি কখনো এত নির্ভুল প্রোগ্রাম তৈরি করে—যা প্রতিদিন কোটি কোটি কোষে নকল হয়,

অথচ ভুল হয় না?


তাহলে বলো, র‍্যান্ডম যদি সবকিছু হয়, তুমি নিশ্চিন্তে বাসের নিচে যেতে পারো।

কারণ হয়তো র‍্যান্ডমলি তুমি বেঁচে যাবে, কে জানে!”


আলমাছ হেসে উঠল—

প্রথমবার, নিজের প্রশ্নেই যেন সে খেই হারিয়ে ফেলেছে।


যুক্তি যেখানে শেষ, ঈমান সেখানে শুরু


শায়খ আব্দুর রাজ্জাক এবার আবেগী কণ্ঠে বললেন:

“আলমাছ, তুমি জানতে চাও আল্লাহ কোথায়?

তুমি যদি তাঁর নিদর্শন না দেখো, তবে কেন আকাশের দিকে তাকাও না?


তুমি যদি তাঁর কণ্ঠ না শুনো, তবে কেন নিজের বিবেকের আওয়াজ শোনো না?”



আলমাছ এবার বলল:

“শায়খ, আপনি এমনভাবে ব্যাখ্যা করলেন, যা আগে কেউ করেনি।

আমার মনে হচ্ছে, আমি হাঁটছি... এক অজানা আলোয়।”


শায়খ আব্দুর রাজ্জাক:

“আলো তো সবসময় ছিল,

তুমি চোখ বন্ধ রেখেছিলে।”



(চলবে... খণ্ড ১০-তে…)


লেখক মাওলানা মোঃ ছাকিব।