GDPR সম্মতি

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করার জন্য আমরা কুকি এবং আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করি। আপনার সম্মতি থাকলে আমরা এই তথ্যগুলি সংগ্রহ করতে পারি। আপনি চাইলে আপনার সম্মতি দিতে পারেন অথবা নীচের পছন্দগুলি পরিবর্তন করতে পারেন। সম্মতি দিন | পছন্দ পরিবর্তন করুন

শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

পর্ব ৩: অদৃশ্য বার্তা ও অচেনা আহ্বান

 

উপন্যাস: পরীর ছোঁয়া

"হাসান এক রহস্যময় বার্তা পায়, যা তাকে এক অদৃশ্য জগতের দিকে আহ্বান জানায়। এটি কি বাস্তব, নাকি কোনো রহস্য লুকিয়ে আছে?"
এক রহস্যময় বার্তা হাসানের হাতে এসে পৌঁছায়—এর পেছনে লুকিয়ে আছে কোন অজানা সত্য?"

হাসান জানালার বাইরে তাকিয়ে রইল। চাঁদের আলো ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে আসছিল, আর বাতাসে সেই পরিচিত সুগন্ধ ভাসছিল। হাসানের মনে হলো, যেন কেউ তাকে ডেকে নিচ্ছে, কিন্তু কণ্ঠস্বর নেই—শুধু এক গভীর অনুভূতি।

সে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়াল, কিতাবটি হাতে নিল। বইটির পাতাগুলো অদ্ভুতভাবে নড়ছিল, যেন বাতাসে হালকা দুলছে। অথচ ঘরের ভেতর কোনো বাতাসের অস্তিত্ব ছিল না। সে এক মুহূর্ত থমকে রইল।

“কী ঘটছে আমার সাথে?” হাসান নিজের মনে বলল।

ঠিক তখনই দরজার ওপাশে এক মৃদু আওয়াজ হলো, যেন কেউ ধীরে ধীরে আঙুল বোলাচ্ছে কাঠের ওপর। হাসানের বুকের মধ্যে অজানা এক শিহরণ খেলে গেল। ভেতর থেকে কৌতূহল আর ভয় একসঙ্গে মাথা চাড়া দিয়ে উঠল।

সে ধীরে ধীরে দরজার কাছে এগিয়ে গেল, হাত বাড়িয়ে ধরল কব্জা। কিন্তু খুলতে গিয়েই সে থেমে গেল।

“কেউ কি আছে?”

কোনো উত্তর এলো না, কিন্তু কিতাবের পৃষ্ঠায় একটি আরবি বাক্য উদ্ভাসিত হলো—

"اللَّهُ وَلِيُّ الَّذِينَ آمَنُوا يُخْرِجُهُم مِّنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ"
"আল্লাহ মুমিনদের অভিভাবক; তিনি তাদের অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসেন।" (সূরা আল-বাকারা: ২৫৭)

হাসানের মনে হলো, এই বাক্যটি যেন বিশেষভাবে তাকে উদ্দেশ্য করে এসেছে।

অচেনা আহ্বান

রাত গভীর হয়ে আসছিল। হাসানের মনে হচ্ছিল, তার ঘরের প্রতিটি কোণায় যেন কিছু একটা রয়েছে—কিন্তু অদৃশ্য।

হঠাৎ, সে অনুভব করল, তার পায়ের নিচে কিছু একটা রাখা। সে দ্রুত নিচু হয়ে দেখল—একটি ছোট্ট, চকচকে কাগজের টুকরো।

কিন্তু তার ঘরে এটি এল কোথা থেকে?

হাসান হাত বাড়িয়ে কাগজটি তুলল। এক ঝলক উজ্জ্বল আলো তার চোখ ঝলসে দিল। কাগজে লেখা ছিল—

“আঁধারের সীমানা পেরিয়ে আসবে কি?”

তার হৃদস্পন্দন দ্বিগুণ হয়ে গেল। এ কাগজ কে রেখে গেল?

সে তখনো জানত না, তার সামনে অপেক্ষা করছে এক রহস্যময় জগৎ, যার দরজা সে অজান্তেই খুলতে শুরু করেছে।

(পরবর্তী পর্ব: হাসানের সামনে খুলে যায় এক গোপন জগতের দ্বার)

লেখক: মাওলানা মোঃ সাকিব  

বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

পর্ব ২: হাসানের অদ্ভুত স্বপ্ন ও পরীর রহস্যময় উপস্থিতি

 

উপন্যাস: পরীর ছোঁয়া

হাসান এক রহস্যময় স্বপ্ন দেখে, যেখানে এক পরীর উপস্থিতি টের পায়। এটি কি কেবল কল্পনা, নাকি বাস্তবতার আভাস?"
হাসানের স্বপ্নে এক রহস্যময় পরীর আবির্ভাব—এ কি শুধুই কল্পনা, নাকি এর পেছনে আছে কোনো গোপন সত্য?"


হাসানের চোখ ধীরে ধীরে বুজে আসছিল। পুরোনো কিতাবটি তার বুকের ওপর রাখা, বাতাসে এখনো সেই অদ্ভুত সুগন্ধ ভাসছে। কিন্তু ক্লান্তি যেন তার শরীরকে অচেতন করে তুলেছে। হঠাৎ, এক অচেনা অনুভূতি তাকে আচ্ছন্ন করল।

সে দেখল, সে একটি অদ্ভুত স্থানে দাঁড়িয়ে আছে। চারদিকে সোনালি রঙের মৃদু আলো জ্বলছে, বাতাসে মিষ্টি ঘ্রাণ। গাছগুলো যেন চকচক করছে, আর তাদের পাতা থেকে হালকা নীলাভ আলো বের হচ্ছে। সামনে একটি ঝর্ণা, যার পানি রূপার মতো উজ্জ্বল।

“এটা কোথায়?” হাসান অবাক হয়ে ফিসফিস করে বলল।

ঠিক তখনই, পেছন থেকে মৃদু হাসির শব্দ শুনতে পেল। সে দ্রুত ঘুরে তাকাল। এক রহস্যময়ী মেয়ে তার সামনে দাঁড়িয়ে। তার পরনে ছিল মুক্তার মতো সাদা পোশাক, চোখ দুটো গভীর, যেন আকাশের রং মিশে আছে সেখানে।

“তুমি কে?” মাহির দ্বিধাগ্রস্ত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল।

মেয়েটি হাসল। তার হাসি ছিল মৃদু, কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে প্রশান্তিদায়ক।

“আমি... আমি সেই, যাকে তুমি খুঁজছো,” মেয়েটি বলল, তার কণ্ঠ যেন বাতাসের সাথে মিশে যায়।

হাসান বিস্মিত হয়ে গেল। “তুমি কি... মানুষ?”

মেয়েটি একটু এগিয়ে এলো, কিন্তু তার পায়ের নিচে কোনো ছায়া পড়ল না।

“আমি মানুষ নই, তবে আমি তোমাদের জগৎ সম্পর্কে জানি।”

হাসানের বুক ধক করে উঠল। “তাহলে তুমি কি... পরী?”

মেয়েটি আর কিছু বলল না। শুধু তার চোখের গভীর দৃষ্টিতে মাহির এক অদ্ভুত প্রশান্তি অনুভব করল।

স্বপ্ন নাকি বাস্তব?

হাসান চোখ খুলল। তার বুক ধড়ফড় করছে। সে বিছানায় বসে পড়ল, চারদিকে তাকাল। ঘরটি অন্ধকার, জানালার বাইরে চাঁদের আলো ছড়াচ্ছে। কিন্তু এক জিনিস সে স্পষ্টভাবে বুঝতে পারল—এই স্বপ্ন স্বাভাবিক ছিল না।

সে হাত বাড়িয়ে কিতাবটি তুলে নিল। বইয়ের এক কোণে হালকা সোনালি আলোর মতো কিছু একটা জ্বলজ্বল করছিল। কিতাবের পাতা উল্টাতেই একটি আরবি বাক্য তার দৃষ্টিতে এলো—

"وَجَعَلْنَا مِنَ الْمَاءِ كُلَّ شَيْءٍ حَيٍّ"
“আর আমি পানি দ্বারা সবকিছু জীবন্ত করেছি।” (সূরা আম্বিয়া: ৩০)

এই আয়াতের অর্থ কী? এটা কেন তার সামনে এল? হাসানের মনে হলো, এই রহস্যের উত্তর তার খুঁজে বের করতেই হবে।

কিন্তু পরীদের অস্তিত্ব কি আসলেই আছে? নাকি শয়তান তাকে ভুল পথে নিয়ে যেতে চাইছে?

এই চিন্তা নিয়েই হাসান আবারো জানালার বাইরে তাকাল। চাঁদের আলোয় তাকে মনে হলো, দূরে বাগানের এক কোণায় একটা ছায়ামূর্তি যেন অদৃশ্য হয়ে গেল।

(পরবর্তী পর্ব: রহস্যের জট খুলতে শুরু করে)

লেখক: মাওলানা মুহাম্মদ সাকিব 

পর্ব ১: অদৃশ্য উপস্থিতি ও প্রথম সংলাপ

 

উপন্যাস: পরীর ছোঁয়া

হাসানের সামনে উন্মোচিত হলো এক অদৃশ্য জগতের রহস্য—পরী কি সত্যিই আছে?"
হাসানের সামনে উন্মোচিত হলো এক অদৃশ্য জগতের রহস্য—পরী কি সত্যিই আছে?"

পর্ব ১: অদৃশ্য উপস্থিতি

রাতের আকাশে চাঁদ সবে উঠেছে, আলোয় মৃদু সোনালি আভা ছড়িয়ে পড়েছে।  হাসান দরজার সামনে বসে ছিল, হাতে একটি পুরোনো কিতাব। কিতাবটি সে তার দাদার লাইব্রেরি থেকে পেয়েছে। কভার ধুলোয় ঢেকে গেলেও ভেতরে অদ্ভুত আরবি হরফের লেখা জ্বলজ্বল করছিল।

হাসান মাদ্রাসায় পড়ে, ইসলামের জ্ঞান অর্জনে গভীর আগ্রহ তার। কিন্তু এই কিতাবটি ছিল অন্যরকম—এতে জিন ও পরীদের সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। "পরী কি সত্যিই অস্তিত্ব রাখে?" নিজের মনেই সে ফিসফিস করে বলল।

হঠাৎ বাতাসে অদ্ভুত একটা সুগন্ধ ভেসে এলো। ঘরের জানালার পর্দা হালকা নড়ে উঠল, যেন কেউ অদৃশ্যভাবে সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। হাসানের বুক ধক করে উঠল।

"তুমি কী খুঁজছ?" কানে আসলো এক মৃদু কণ্ঠস্বর।

সে দ্রুত চারপাশে তাকালো, কিন্তু কাউকে দেখতে পেল না। বুকের মধ্যে যেন ঝড় বইতে শুরু করল।

"কে?" হাসানের গলা শুকিয়ে এলো।

"আমি... আমি সেই, যাকে তুমি খুঁজছো," নরম কিন্তু গভীর স্বরে উত্তর এলো।

হাসান শিহরিত হলো। কিতাবের পাতায় চোখ বুলিয়ে দেখল, সেখানে লেখা—"যদি কোনো নেককার মানুষ আল্লাহর পথে থাকে, তবে কোনো এক সময় সে এক রহস্যময় সত্তার উপস্থিতি অনুভব করতে পারে।"

সে কী সত্যিই কারো উপস্থিতি অনুভব করছে? না কি কল্পনা?

পরবর্তী পর্ব: হাসানের অদ্ভুত স্বপ্ন

লেখক: মাওলানা মোঃ সাকিব 

"পরীর প্রেম: এক অবাস্তব ভালোবাসার বাস্তবtragédie"

 

পরীর প্রেম: এক মর্মান্তিক কাহিনি

পরীর প্রেম: এক মর্মান্তিক ইসলামিক কাহিনি, যেখানে মানব ও পরীর সম্পর্ক কুরআন-হাদিসের আলোকে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।"
মানুষ ও পরীর প্রেম—এক অবাস্তব ভালোবাসার বাস্তবtragédie, কুরআন-হাদিসের আলোকে এক মর্মান্তিক কাহিনি।"

পরিচিতি

আহমাদুল্লাহ একজন সাধারণ যুবক, যার হৃদয়ে ইসলামের প্রতি গভীর অনুরাগ। ছোটবেলা থেকেই সে স্বপ্ন দেখে এমন এক জীবনসঙ্গীর, যে তাকওয়া ও নৈতিকতায় অনন্য। কিন্তু এক অদ্ভুত ঘটনা তার জীবনকে বদলে দেয় চিরতরে।


প্রথম অধ্যায়: রহস্যময় সাক্ষাৎ

এক রাতে আহমাদুল্লাহ তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে নিজেদের ছাদ বাগানে বসে আল্লাহর জিকির করছিল। হঠাৎ সে অনুভব করল, চারপাশের পরিবেশ কেমন যেন ভারী হয়ে উঠছে। বাতাসে এক অদ্ভুত মিষ্টি সুবাস ছড়িয়ে পড়ছে। কিছুক্ষণ পর সামনে এক অপরূপা সুন্দরী নারীকে দেখতে পেল, যার রূপ মানুষের নয়—সে যেন অন্য জগতের সত্তা।

আহমাদুল্লাহ কিছুটা ভয় পেল, কিন্তু নারীটি মৃদু হাসল এবং বলল,

“হে আহমাদুল্লাহ, আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আমি মানুষ নই, এক পরী। আল্লাহর আদেশে আমি তোমার সামনে এসেছি।”

আহমাদুল্লাহ বিস্মিত হয়ে বলল, “পরী! কিন্তু কেন?”

পরী উত্তরে বলল, “তুমি একজন মুত্তাকি ব্যক্তি। আল্লাহ তোমার জন্য আমাকে নির্ধারণ করেছেন।”

আহমাদুল্লাহ কিছুক্ষণ নীরবে রইল। তার হৃদয়ে দ্বিধা, কারণ মানুষ ও পরীর মধ্যে সম্পর্ক কি আদৌ সম্ভব?


দ্বিতীয় অধ্যায়: ভালোবাসার অগ্নিপরীক্ষা

পরী তাকে ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি দেয়। আহমাদুল্লাহও অনুভব করে, তার হৃদয়ে অজানা এক টান সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সে দ্বিধান্বিত ছিল—এ সম্পর্ক কি ইসলামসম্মত?

তখন সে কুরআনের এই আয়াতটি স্মরণ করল:

وَيَخْلُقُ مَا لَا تَعْلَمُونَ
“আর তিনি সৃষ্টি করেন যা তোমরা জানো না।” (সূরা النحل: ৮)

সে বুঝতে পারল, পরী আল্লাহরই সৃষ্টির একটি অংশ। কিন্তু তাদের বিয়ে কি বৈধ?

সে একটি হাদিস স্মরণ করল, যেখানে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

"আল্লাহর রাসূলকে জিনদের বিবাহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘তারা তোমাদের ধর্ম গ্রহণ করলে বিয়ে বৈধ হতে পারে, অন্যথায় নয়।'” (ইমাম ইবন তায়মিয়া, মাজমুউল ফাতাওয়া)

তাহলে পরী যদি ইসলাম গ্রহণ করে, তবে কি তাদের বিয়ে সম্ভব? আহমাদুল্লাহ সাহস করে পরীকে বলল, “তুমি কি ইসলামের বিধান মেনে চলবে?”

পরী চোখ বন্ধ করল, তারপর বলল, “আমি ইসলাম গ্রহণ করছি, যদি তুমি আমাকে দ্বীনের পথে পরিচালিত কর।”


তৃতীয় অধ্যায়: দুঃখের সাগর

তাদের বিবাহ সম্পন্ন হলো, কিন্তু কিছুদিন পরেই অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে শুরু করল। আহমাদুল্লাহ দেখল, প্রতিদিন গভীর রাতে পরী কোথাও চলে যায়। এক রাতে সে তার অনুসরণ করল।

সে দেখতে পেল, পরী বাতাসের বেগে এক অজানা স্থানে চলে যাচ্ছে। হঠাৎ সে থমকে গেল—সে দেখল পরী আগুনের সাদা শিখার মতো কিছু একটার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আহমাদুল্লাহ আতঙ্কিত হয়ে বুঝল, পরীর পূর্বের জগত এখনো তাকে টানছে।

আহমাদুল্লাহ তাকে বলল, “তুমি কি এই জগত ছাড়তে পারবে না?”

পরী কাঁদতে কাঁদতে বলল, “আমার জন্ম অন্য জগতে। তোমার ভালোবাসার জন্য আমি পৃথিবীতে থাকতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমি এখানে পুরোপুরি থাকতে পারছি না। আমার আত্মা এখনো আমার জগতে টানে।”

আহমাদুল্লাহ বুঝতে পারল, মানুষ ও পরীর ভালোবাসা কখনোই স্থায়ী হতে পারে না। সে মনে করল আল্লাহর এই বাণী:

كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ
“পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই ধ্বংসশীল।” (সূরা الرحمن: ২৬)


শেষ অধ্যায়: বিচ্ছেদ ও আল্লাহর প্রতি প্রত্যাবর্তন

এক রাতে আহমাদুল্লাহ জাগ্রত হলো এবং দেখল পরী আর নেই। কেবল বাতাসে এক মিষ্টি সুবাস রয়ে গেছে। সে জানত, এটাই ছিল শেষ দেখা।

তারপর সে সিজদায় লুটিয়ে পড়ল এবং আল্লাহর কাছে কেঁদে বলল, “হে রব, আমাকে এ দুনিয়ার ভালোবাসার চেয়ে তোমার ভালোবাসায় মগ্ন করে দাও।”

আহমাদুল্লাহ বুঝতে পারল, দুনিয়ার সকল সম্পর্ক ক্ষণস্থায়ী। কেবল আল্লাহর ভালোবাসাই চিরন্তন।


উপসংহার

এই গল্প আমাদের শেখায়, পরী বা মানুষ—সব সম্পর্কই একদিন শেষ হয়ে যায়। আমাদের উচিত আল্লাহর ভালোবাসাকে অগ্রাধিকার দেওয়া।

اللهم اجعل حبك أحب إليّ من نفسي وأهلي ومن الماء البارد

“হে আল্লাহ, তোমার ভালোবাসাকে আমার নিজের, আমার পরিবার এবং শীতল পানির চেয়েও প্রিয় করে দাও।” (তিরমিজি, ৩৪৯০)


আপনার মতামত দিন!

গল্পটি কেমন লাগল? কমেন্টে জানান!  

লেখক: মাওলানা মোঃ সাকিব 

সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

"অদৃশ্য শত্রু: জিনের ফাঁদ থেকে মুক্তির সত্য কাহিনি"


গল্প: অদৃশ্য শত্রু

পুরনো বাড়ির রহস্যময় ঘটনা, যেখানে জিনের উপস্থিতি অনুভব করে এক যুবক। কুরআনের আলো কীভাবে তাকে রক্ষা করল, তা জানুন এই গল্পে।"
"জিনের ছলনা নাকি মানুষের কুসংস্কার? সত্য উন্মোচনের রহস্যময় গল্প!"

بِسْمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ

"وَأَنَّهُ كَانَ رِجَالٌ مِّنَ ٱلْإِنسِ يَعُوذُونَ بِرِجَالٍ مِّنَ ٱلْجِنِّ فَزَادُوهُمْ رَهَقًا"
(সূরা আল-জিন: ৬)
অর্থ: "আর নিশ্চয়ই মানুষদের কিছু লোক জিনদের কিছু লোকের আশ্রয় গ্রহণ করত, ফলে তারা তাদের জন্য দুঃসাহস বাড়িয়ে দিত।"


১. রহস্যময় ঘর

রিয়াজ নতুন বাড়িতে উঠেছে। শহর থেকে অনেক দূরে, নির্জন পরিবেশ। বাড়িটি অনেক পুরনো, আশপাশে ঘন জঙ্গল। প্রথম দিন থেকেই অদ্ভুত ব্যাপার ঘটতে থাকে। রাতে দরজা-জানালা বন্ধ থাকার পরও বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ শোনা যায়। কখনো মনে হয়, কারো ফিসফিস করা কণ্ঠস্বর ভেসে আসছে।

এক রাতে, রিয়াজ অনুভব করল, কেউ তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। অন্ধকারে চোখ মেলতেই সে দেখতে পেল ছায়াময় এক অবয়ব! আতঙ্কিত হয়ে সে চিৎকার করল, কিন্তু গলা দিয়ে কোনো শব্দ বের হলো না।

২. বিপদের শুরু

পরের দিন সকালে স্থানীয় এক বৃদ্ধা আব্দুল মাজেদ এসে বলল,
"তুমি এখানে বেশিদিন থাকতে পারবে না, ছেলে। এ বাড়ির মালিকেরা মানুষ নয়!"

রিয়াজ অবাক হয়ে জানতে চাইল, "মানে?"

বৃদ্ধা বলল,
"এখানে এক অভিশপ্ত আত্মা বাস করে, বহু বছর ধরে! যারা এখানে থেকেছে, সবাই বিপদে পড়েছে।"

রিয়াজ প্রথমে এটিকে কুসংস্কার ভেবে উড়িয়ে দিল। কিন্তু এক রাতে, সে অনুভব করল, কেউ তার কানে ফিসফিস করছে,
"তুমি চলে যাও... নাহলে ভালো হবে না!"

রিয়াজ ভয় পেলেও এক বন্ধু তাকে উপদেশ দিল,
"আল্লাহর ওপর ভরসা রাখো। রাতে ঘুমানোর আগে আয়াতুল কুরসি পড়ে নিও।"

৩. বিভীষিকার রাত

পরদিন রাতে, রিয়াজ আয়াতুল কুরসি পড়ে ঘুমাতে গেল। মাঝরাতে আবার সেই অদ্ভুত আওয়াজ! এবার স্পষ্টভাবে দেখল, এক ছায়াময় অবয়ব তার দিকে এগিয়ে আসছে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, যখনই সে "أعوذ بالله من الشيطان الرجيم" পড়ল, তখনই সেই অবয়ব ছিটকে পড়ল!

এবার সে বুঝতে পারল, এটা কোনো ভূত নয়, বরং জিনের কারসাজি!

৪. রহস্য উন্মোচন

পরের দিন এক ইসলামিক স্কলার মুফতি আব্দুল জব্বার সাহেব কে ডাকা হলো। তিনি বললেন,

"ভাই, কোনো মানুষ মারা গেলে তার আত্মা ঘুরে বেড়ায় না। এটা আসলে জিনদের কাজ। তারা মৃত মানুষের রূপ ধরে মানুষকে ভয় দেখায়।"

তিনি আরও বললেন,
"ইসলামের দৃষ্টিতে, জিনের অস্তিত্ব সত্য। কিন্তু তারা আমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারে না, যদি আমরা আল্লাহর আশ্রয় গ্রহণ করি।"

তিনি রিয়াজকে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যার দোয়া, আয়াতুল কুরসি, এবং সূরা আল-বাকারা তিলাওয়াতের পরামর্শ দিলেন।

৫. মুক্তি

রিয়াজ প্রতিদিন কোরআন তিলাওয়াত করতে শুরু করল। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই বাড়িটির অদ্ভুত ঘটনাগুলো বন্ধ হয়ে গেল। কারণ, কোরআনের আলো জিন-শয়তানের জন্য অগ্নিশলাকার মতো!

আল্লাহ বলেন:
"إِنَّ كَيْدَ ٱلشَّيْطَٰنِ كَانَ ضَعِيفًۭا" (সূরা আন-নিসা: ৭৬)
অর্থ: "নিশ্চয় শয়তানের কৌশল খুবই দুর্বল।"


গল্পের শিক্ষা:

✅ মৃত্যুর পর মানুষ ফিরে আসে না, ভূত বলে কিছু নেই।
✅ জিন আমাদের দৃষ্টির আড়ালে থাকে, তবে তারা মানুষের ক্ষতি করতে পারে না যদি আমরা আল্লাহর আশ্রয় গ্রহণ করি।
✅ প্রতিদিন আয়াতুল কুরসি, সূরা আল-ফালাক, সূরা আন-নাস পড়া উচিত।
✅ জিনদের সাহায্য চাওয়া হারাম, কারণ এটি শিরকের পথে নিয়ে যেতে পারে।

লেখক মাওলানা মোঃ সাকিব