পর্ব ৩০: ধোঁয়ার আড়ালে সত্য (১ম অংশ)
![]() | |
"সত্যের পথে বাধা আসবেই, কিন্তু ঈমানের শক্তি কখনো হার মানে না!" |
রাত গভীর। চারপাশ নিস্তব্ধ, অথচ হাসানে মনে যেন এক ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
গত কয়েকদিন ধরে যা ঘটছে, তা স্বাভাবিক কিছু নয়। কেউ একজন তাকে অনুসরণ করছে, তাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু সে জানে, এই পথ থেকে সে পিছু হটতে পারে না।
"সত্য জানতে চাইলে এর জন্য মূল্য দিতে হবে…"
এই কথাটা বারবার তার কানে বাজছে।
সে জানালার পাশে দাঁড়িয়ে বাইরে তাকালো। রাস্তার অপর প্রান্তে একটা কালো ছায়া দাঁড়িয়ে আছে। সে বুঝতে পারলো—তাকে আবারও অনুসরণ করা হচ্ছে!
হুমকির ছায়া
হাসানের মোবাইল বেজে উঠলো। অচেনা নাম্বার।
"তুমি থামবে না, তাই তো?"
হাসান ঠোঁট কামড়ে ধরলো।
"সত্য জানার অধিকার আমার আছে।"
"তাহলে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হও!"
কথাটা বলেই লাইন কেটে গেল।
একটা ঠাণ্ডা শিহরণ বয়ে গেল তার শরীর বেয়ে।
সে জানে, শয়তান সবসময় সত্যের পথে বাধা সৃষ্টি করে। কুরআনের আয়াত মনে পড়লো—
وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ ۚ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ
"তোমরা শয়তানের পথ অনুসরণ করো না। সে তো তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।" (সূরা বাকারা: ১৬৮)
পরী নুরসাবার আগমন
হাসান চোখ বন্ধ করে পরীর কথা ভাবতে লাগলো।
হঠাৎ বাতাসের মধ্যে একটা কোমল সুবাস ছড়িয়ে পড়লো। কক্ষের আলো যেন একটু ম্লান হয়ে গেল। তারপর এক মিষ্টি কণ্ঠ ভেসে এলো—
"তুমি ভয় পেয়েছো, হাসান?"
হাসান তাকিয়ে দেখলো, পরী নূরসাবা দাঁড়িয়ে আছে।
"কেউ আমাকে হুমকি দিচ্ছে। মনে হচ্ছে, তারা চায় না যে আমি সত্যটা জানি," হাসান বলল।
পরী নূরসাবা গভীরভাবে তাকালো।
"তুমি জানো, হাসান? যখন কেউ সত্যের পথে আসে, তখন শয়তান তাকে সরিয়ে দিতে চায়।"
হাসান ধীরে ধীরে মাথা নাড়লো।
"তাহলে এখন কী করবো?"
নূরসাবা হাসলো।
"তুমি কি সত্যের জন্য সবকিছু ত্যাগ করতে প্রস্তুত?"
পর্ব ৩০ ধোঁয়ার আড়ালে সত্য (২য় অংশ)
হাসান পরী নূরসাবার চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো।
সত্যের জন্য সবকিছু ত্যাগ করতে হবে?
এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া কি এত সহজ?
তার মাথার ভেতরে হাজারটা প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে।
"আমি ভয় পাই না, নূরসাবা। কিন্তু আমি জানি না, সামনে কী অপেক্ষা করছে।"
পরী নূরসাবা একটু হাসলো।
ভয় পাওয়া স্বাভাবিক, হাসান। কিন্তু আল্লাহর উপর ভরসা রাখো।"
তারপর সে কুরআনের একটি আয়াত তেলাওয়াত করলো—
وَمَنْ يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَل لَهُ مَخْرَجًا وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ
"যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের পথ তৈরি করে দেন এবং তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দেন, যা সে কল্পনাও করতে পারে না।" (সূরা আত-তালাক: ২-৩)
হাসানের মনে কিছুটা প্রশান্তি এলো।
অজানা শত্রুর ছায়া
পরী নূরসাবার সাথে কথা বলার পর হাসানের মনে শক্তি এলো। কিন্তু কিছু একটা ঠিকঠাক মনে হচ্ছে না।
কেউ একজন তাকে অনুসরণ করছে, তার গতিবিধি লক্ষ্য করছে।
সে জানে, কেবল পরীর সাহায্যে সব সমস্যার সমাধান হবে না।
তাকে নিজেকেও প্রস্তুত হতে হবে।
নতুন সংকেত
মোবাইল ফোনটা আবার বেজে উঠলো।
এইবার নাম্বারটা পরিচিত।
তার সাংবাদিক বন্ধু, জাবের।
হাসান, আমি কিছু তথ্য পেয়েছি। কিন্তু সাবধান, এটা খুবই স্পর্শকাতর বিষয়!"
"কী পেয়েছো?"
"তুমি যাদের কথা বলছিলে, তারা কোনো সাধারণ চক্র নয়। তারা এমন কিছু লুকিয়ে রেখেছে, যা প্রকাশিত হলে বড় বিপর্যয় নেমে আসবে।"
হাসানের হাত শক্ত হয়ে এলো।
"তাহলে আমাদের আরও গভীরে যেতে হবে।"
আমি তোমার পাশে আছি, কিন্তু সাবধান থেকো।"
হাসান ফোন রেখে দিলো।
তারপর কুরআনের আয়াত মনে পড়লো—
إِنَّ اللَّهَ يُدَافِعُ عَنِ الَّذِينَ آمَنُوا
"নিশ্চয়ই আল্লাহ ঈমানদারদের পক্ষ থেকে প্রতিরক্ষা করেন।" (সূরা হজ্জ: ৩৮)
সে জানে, সত্যের পথে বাধা আসবেই।
কিন্তু সে পিছিয়ে যাবে না।
পর্ব ৩০ ধোঁয়ার আড়ালে সত্য (৩য় অংশ )
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। অনুগ্রহ করে শালীন ভাষায় কমেন্ট করুন।"