GDPR সম্মতি

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করার জন্য আমরা কুকি এবং আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করি। আপনার সম্মতি থাকলে আমরা এই তথ্যগুলি সংগ্রহ করতে পারি। আপনি চাইলে আপনার সম্মতি দিতে পারেন অথবা নীচের পছন্দগুলি পরিবর্তন করতে পারেন। সম্মতি দিন | পছন্দ পরিবর্তন করুন

মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল, ২০২৫

অন্ধকারের প্রতিশোধ

 চতুর্থ খণ্ড: সত্যের সন্ধানে

মাওলানা আহমদ শফি গভীর রাতে মাদরাসায়, মুখোশধারীদের চক্রান্ত, শাওয়াল মাসের বিশেষ আমল
সত্যের পথে বাধা আসবেই, কিন্তু আল্লাহ তার দ্বীনের রক্ষকদের ছেড়ে দেন না।


শহরের একপ্রান্তে বসে থাকা মাওলানা মাওলানা আহমদ শফি সাহেবের মনের মধ্যে নানা চিন্তা ঘুরছিল। তারা যেখানেই গিয়েছিলেন, সেখানে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পেয়েছিলেন। তিনি জানতেন, তাদের বিরুদ্ধে যে লড়াই শুরু হয়েছে, তা শুধু বুদ্ধিবৃত্তিক নয়, এটি একটি ধর্মীয় যুদ্ধ। তাদের লক্ষ্য ছিল শুধু ইসলাম নয়, বরং ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা।


তবে শাওয়াল মাসের বরকত তাকে সাহস দিচ্ছিল। তিনি জানতেন, আল্লাহর সাহায্য ছাড়া এ যুদ্ধ জয় করা সম্ভব নয়। এখন সময় এসেছে সত্যের দিকে পথ চলা শুরু করার, এবং মসজিদে ফিরে গিয়ে তিনি সকল ছাত্রদের একত্রে ডেকে বললেন, “আমরা কিছু বড় সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি। প্রথমেই আমাদের নিজেদের ঈমান ও দ্বীনি জ্ঞানকে শক্তিশালী করতে হবে।”


তিনি আবারো শাওয়াল মাসের আমলের গুরুত্ব বুঝিয়ে দিলেন, “এ মাসে ছয়টি নফল রোজা রাখা যেমন সওয়াবের কাজ, তেমনি আমাদের প্রতিদিনের ইবাদত ও দ্বীনি শিক্ষা আরও দৃঢ় করবে।”


তারপর, তিনি সবাইকে একটি নতুন পরিকল্পনার কথা জানালেন। “আমরা একটি মিটিং আয়োজন করব, যেখানে শহরের নেতৃবৃন্দ, আলেম-উলামা ও যুবকদের সমন্বয়ে ইসলামি মূল্যবোধ ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আলোচনা হবে।”


এটি ছিল শহরে প্রথম বৃহৎ উদ্যোগ, যেখানে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা তুলে ধরা হবে। মাওলানা আহমদ শফি জানতেন, একটি সংগঠন তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু তার চাইতেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল সঠিক পথে এগিয়ে যাওয়ার সাহস ও শক্তি।


অন্যদিকে, ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের পরিকল্পনা আরও গভীরভাবে বাস্তবায়ন করতে লাগল। তারা মাওলানা সালেহ এবং তার সমর্থকদের সম্পর্কে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে দিতে শুরু করল। তাদের লক্ষ্য ছিল যুবকদের বিভ্রান্ত করা, যাতে তারা ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা থেকে দূরে চলে যায়।


একদিন, মাওলানা আহমদ শফি একটি সাহসী সিদ্ধান্ত নেন। তিনি শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় গিয়ে এক বড় বক্তৃতা দেবেন, যেখানে ইসলামিক মূল্যবোধ, ন্যায় এবং ভ্রাতৃত্বের গুরুত্ব তুলে ধরবেন। তবে জানতেন, এই বক্তৃতা সহজ হবে না। ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের সব শক্তি নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। কিন্তু মাওলানা আহমদ শফি কখনও পিছু হটবেন না।


@@@


 শহরের প্রধান বক্তৃতা, ষড়যন্ত্রকারীদের চ্যালেঞ্জ এবং মাওলানা সালেহের নেতৃত্বের প্রথম বড় পরীক্ষা।


সন্ধ্যা নেমে এসেছে শহরের আকাশে। বাতাসে যেন এক অদৃশ্য উত্তেজনা—মাওলানা আহমদ শফির ঘোষিত বক্তৃতার দিন এসেছে। মসজিদ চত্বরে জড়ো হয়েছে হাজারো মানুষ। যুবক, প্রবীণ, ব্যবসায়ী, ছাত্র—সবাই অপেক্ষা করছে, এক মহৎ বাণী শোনার জন্য।


মাওলানা আহমদ শফি ধীর পায়ে মিম্বারের দিকে এগিয়ে গেলেন। তার চেহারায় এক অদ্ভুত দৃঢ়তা। তিনি জানতেন, এই মুহূর্তে কেবল দ্বীনি জ্ঞান নয়, বরং ঈমান ও সাহসেরও পরীক্ষা চলছে।


তিনি বর্ণনা করলেন, “আমরা আজ এক সংকটময় সময়ে দাঁড়িয়ে আছি। সত্য-মিথ্যার সংঘাত চিরকাল ছিল, থাকবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, আমরা কোন পথে হাঁটব?”


তিনি কুরআনের আয়াত ও রাসুল (সা.)-এর হাদিস তুলে ধরলেন, যা মানুষকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর শিক্ষা দেয়। “শাওয়াল মাস আমাদের শিক্ষা দেয়, শুধু ছয়টি রোজা রাখাই নয়, বরং আমাদের নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ করাও জরুরি।”


কিন্তু জনতার ভিড়ে লুকিয়ে ছিল ষড়যন্ত্রকারীদের লোক। তাদের নেতা, মাসুদ, একজন বিদ্বেষী এবং বিভ্রান্তিকর লোক। সে চুপচাপ দাঁড়িয়ে মাওলানা সালেহের কথা শুনছিল, কিন্তু তার মুখে ছিল এক রহস্যময় হাসি।


হঠাৎ জনতার মাঝে এক বিশৃঙ্খলা দেখা দিল! কেউ একজন চিৎকার করে উঠল, “মাওলানা আহমদ শফি সত্য গোপন করছেন! তিনি মানুষকে ভুল পথে চালিত করছেন!”


ভিড়ের একাংশ ধোঁকায় পড়ে ফিসফিস করতে লাগল। মাওলানা সালেহ সামান্য থামলেন, তারপর বললেন, “আমাদের দ্বীনে প্রশ্ন তোলার অনুমতি আছে, তবে মিথ্যার প্রচার ইসলাম সমর্থন করে না।”


এরপর তিনি সরাসরি সেই লোকটির দিকে তাকিয়ে বললেন, “আপনার অভিযোগের পক্ষে দলিল দিন, আমি কুরআন-হাদিস থেকে জবাব দেব।”


লোকটি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেল। সে জানত, তার অভিযোগের পেছনে কোনো ভিত্তি নেই। মাসুদ বুঝতে পারল, তার ষড়যন্ত্র এক মুহূর্তেই নস্যাৎ হয়ে যাচ্ছে।


@@@

ষড়যন্ত্র আরও গভীর হবে। মাওলানা সালেহ কীভাবে তাদের মোকাবিলা করবেন? শহরে কি সত্যের আলো জ্বলবে, নাকি অন্ধকারের ছায়া দীর্ঘতর হবে?



 অন্ধকারের প্রতিশোধ

মাওলানা আহমদ শফির দৃঢ় কথাগুলো জনতার হৃদয়ে আলোড়ন তুলেছিল। সত্যের ডাক এমনই হয়—যারা মন থেকে শোনে, তারা আলো পায়, আর যারা বিদ্বেষ পোষণ করে, তারা আরও গভীর অন্ধকারে তলিয়ে যায়।

বক্তৃতা শেষে জনতা ধীরে ধীরে ছ散 হয়ে যেতে লাগল, কিন্তু মাসুদ মনের মধ্যে প্রতিশোধের আগুন নিয়ে দাঁড়িয়ে রইল। তার পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে, কিন্তু সে সহজে হাল ছাড়বে না। সে চুপচাপ তার অনুগত কয়েকজন লোককে একত্র করল এবং তাদের নির্দেশ দিল, “এই মাওলানা আহমদ শফি আমাদের পরিকল্পনা বানচাল করছে। এবার তাকে সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।”

সেদিন রাতেই মাওলানা আহমদ শফি মাদরাসায় ফিরে আসেন। তার সঙ্গীরা তাকে সতর্ক করল, “হুজুর, আমরা শুনেছি কিছু মানুষ আপনার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। আপনার চলাফেরা সাবধানতার সাথে করা উচিত।”

তিনি হেসে বললেন, “সত্যের পথ কখনোই সহজ হয় না। তবে আমি যদি অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় পাই, তাহলে আল্লাহর সামনে কী জবাব দেব?”

শাওয়াল মাসের আমল ও এক অদ্ভুত ঘটনা

সেই রাতে তিনি দীর্ঘ কিয়ামুল লাইল করলেন। শাওয়াল মাসের বরকতের কথা স্মরণ করে তিনি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলেন, “হে আমার রব! তুমি আমাকে শক্তি দাও, আমাকে হেদায়েত দাও এবং আমাকে ধৈর্য ধরার তাওফিক দাও।”

ফজরের পর, তিনি তাঁর ছাত্রদের বললেন, “শাওয়াল মাস আমাদের শুধু ছয়টি রোজা রাখার শিক্ষা দেয় না, এটি আমাদের আত্মশুদ্ধির মাস। এই মাসে যে বেশি বেশি নফল ইবাদত করে, আল্লাহ তাকে অতীতের গুনাহ মাফ করে দেন। অতএব, আমরা শুধু বাহ্যিক ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করব না, বরং আত্মারও পরিশুদ্ধি করব।”

হঠাৎ এক গভীর রাতে…

তিন দিন পর, গভীর রাতে মাদরাসার পাশে কিছু অস্পষ্ট পদধ্বনি শোনা গেল। একজন ছাত্র তা শুনে চমকে উঠল। সে ধীরে ধীরে জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখল, কয়েকজন মুখোশধারী লোক মাদরাসার দিকে এগিয়ে আসছে! তাদের হাতে ছিল লাঠি ও দড়ি।

ছাত্রটি দ্রুত দৌড়ে গিয়ে মাওলানা আহমদ শফিকে খবর দিল, “হুজুর! কিছু মানুষ আমাদের ওপর হামলা করতে আসছে!”

মাওলানা আহমদ শফি ধীরস্থির কণ্ঠে বললেন, “ভয় পেও না। আল্লাহ আমাদের সাহায্য করবেন।” তিনি অল্প সময়ের মধ্যে সবাইকে একত্র করলেন এবং বললেন, “সত্যের পথে যে বাধা আসে, তা ধৈর্য ও কৌশল দিয়ে মোকাবিলা করতে হয়। আমরা দোয়া করব, তবে আত্মরক্ষা করাও জরুরি।”

তিনি দ্রুত কয়েকজন সাহসী ছাত্রকে দরজার কাছে দাঁড় করালেন এবং অন্যদের ভেতরে পাঠিয়ে দিলেন। মুখোশধারীরা দরজায় পৌঁছানো মাত্রই একদল ছাত্র তাদের বাধা দিল। ধাক্কাধাক্কি শুরু হলো। একপর্যায়ে একজন আক্রমণকারী চিৎকার করে উঠল, “তুমি আমাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহস দেখাচ্ছ?”

মাওলানা আহমদ শফি সামনে এসে দাঁড়ালেন। তার চোখে ছিল ইমানের শক্তি। তিনি বললেন, “আমি সত্যের পথে আছি, এবং সত্য কখনো পরাজিত হয় না।”

পরবর্তী খণ্ডে:

এই রাত কি শুধু একটা সাধারণ হামলা ছিল, নাকি এর পেছনে আরও গভীর ষড়যন্ত্র লুকিয়ে আছে? সত্য-মিথ্যার সংঘর্ষ কোথায় গিয়ে শেষ হবে?

লেখক মাওলানা মোঃ সাকিব।

1 টি মন্তব্য:

আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। অনুগ্রহ করে শালীন ভাষায় কমেন্ট করুন।"