উপন্যাস: পরীর ছোঁয়া
হাসান জানালার বাইরে তাকিয়ে রইল। চাঁদের আলো ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে আসছিল, আর বাতাসে সেই পরিচিত সুগন্ধ ভাসছিল। হাসানের মনে হলো, যেন কেউ তাকে ডেকে নিচ্ছে, কিন্তু কণ্ঠস্বর নেই—শুধু এক গভীর অনুভূতি।
সে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়াল, কিতাবটি হাতে নিল। বইটির পাতাগুলো অদ্ভুতভাবে নড়ছিল, যেন বাতাসে হালকা দুলছে। অথচ ঘরের ভেতর কোনো বাতাসের অস্তিত্ব ছিল না। সে এক মুহূর্ত থমকে রইল।
“কী ঘটছে আমার সাথে?” হাসান নিজের মনে বলল।
ঠিক তখনই দরজার ওপাশে এক মৃদু আওয়াজ হলো, যেন কেউ ধীরে ধীরে আঙুল বোলাচ্ছে কাঠের ওপর। হাসানের বুকের মধ্যে অজানা এক শিহরণ খেলে গেল। ভেতর থেকে কৌতূহল আর ভয় একসঙ্গে মাথা চাড়া দিয়ে উঠল।
সে ধীরে ধীরে দরজার কাছে এগিয়ে গেল, হাত বাড়িয়ে ধরল কব্জা। কিন্তু খুলতে গিয়েই সে থেমে গেল।
“কেউ কি আছে?”
কোনো উত্তর এলো না, কিন্তু কিতাবের পৃষ্ঠায় একটি আরবি বাক্য উদ্ভাসিত হলো—
"اللَّهُ وَلِيُّ الَّذِينَ آمَنُوا يُخْرِجُهُم مِّنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ"
"আল্লাহ মুমিনদের অভিভাবক; তিনি তাদের অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসেন।" (সূরা আল-বাকারা: ২৫৭)
হাসানের মনে হলো, এই বাক্যটি যেন বিশেষভাবে তাকে উদ্দেশ্য করে এসেছে।
অচেনা আহ্বান
রাত গভীর হয়ে আসছিল। হাসানের মনে হচ্ছিল, তার ঘরের প্রতিটি কোণায় যেন কিছু একটা রয়েছে—কিন্তু অদৃশ্য।
হঠাৎ, সে অনুভব করল, তার পায়ের নিচে কিছু একটা রাখা। সে দ্রুত নিচু হয়ে দেখল—একটি ছোট্ট, চকচকে কাগজের টুকরো।
কিন্তু তার ঘরে এটি এল কোথা থেকে?
হাসান হাত বাড়িয়ে কাগজটি তুলল। এক ঝলক উজ্জ্বল আলো তার চোখ ঝলসে দিল। কাগজে লেখা ছিল—
“আঁধারের সীমানা পেরিয়ে আসবে কি?”
তার হৃদস্পন্দন দ্বিগুণ হয়ে গেল। এ কাগজ কে রেখে গেল?
সে তখনো জানত না, তার সামনে অপেক্ষা করছে এক রহস্যময় জগৎ, যার দরজা সে অজান্তেই খুলতে শুরু করেছে।
(পরবর্তী পর্ব: হাসানের সামনে খুলে যায় এক গোপন জগতের দ্বার)
লেখক: মাওলানা মোঃ সাকিব
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। অনুগ্রহ করে শালীন ভাষায় কমেন্ট করুন।"