উপন্যাস: পরীর ছোঁয়া
সে দেখল, সে একটি অদ্ভুত স্থানে দাঁড়িয়ে আছে। চারদিকে সোনালি রঙের মৃদু আলো জ্বলছে, বাতাসে মিষ্টি ঘ্রাণ। গাছগুলো যেন চকচক করছে, আর তাদের পাতা থেকে হালকা নীলাভ আলো বের হচ্ছে। সামনে একটি ঝর্ণা, যার পানি রূপার মতো উজ্জ্বল।
“এটা কোথায়?” হাসান অবাক হয়ে ফিসফিস করে বলল।
ঠিক তখনই, পেছন থেকে মৃদু হাসির শব্দ শুনতে পেল। সে দ্রুত ঘুরে তাকাল। এক রহস্যময়ী মেয়ে তার সামনে দাঁড়িয়ে। তার পরনে ছিল মুক্তার মতো সাদা পোশাক, চোখ দুটো গভীর, যেন আকাশের রং মিশে আছে সেখানে।
“তুমি কে?” মাহির দ্বিধাগ্রস্ত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল।
মেয়েটি হাসল। তার হাসি ছিল মৃদু, কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে প্রশান্তিদায়ক।
“আমি... আমি সেই, যাকে তুমি খুঁজছো,” মেয়েটি বলল, তার কণ্ঠ যেন বাতাসের সাথে মিশে যায়।
হাসান বিস্মিত হয়ে গেল। “তুমি কি... মানুষ?”
মেয়েটি একটু এগিয়ে এলো, কিন্তু তার পায়ের নিচে কোনো ছায়া পড়ল না।
“আমি মানুষ নই, তবে আমি তোমাদের জগৎ সম্পর্কে জানি।”
হাসানের বুক ধক করে উঠল। “তাহলে তুমি কি... পরী?”
মেয়েটি আর কিছু বলল না। শুধু তার চোখের গভীর দৃষ্টিতে মাহির এক অদ্ভুত প্রশান্তি অনুভব করল।
স্বপ্ন নাকি বাস্তব?
হাসান চোখ খুলল। তার বুক ধড়ফড় করছে। সে বিছানায় বসে পড়ল, চারদিকে তাকাল। ঘরটি অন্ধকার, জানালার বাইরে চাঁদের আলো ছড়াচ্ছে। কিন্তু এক জিনিস সে স্পষ্টভাবে বুঝতে পারল—এই স্বপ্ন স্বাভাবিক ছিল না।
সে হাত বাড়িয়ে কিতাবটি তুলে নিল। বইয়ের এক কোণে হালকা সোনালি আলোর মতো কিছু একটা জ্বলজ্বল করছিল। কিতাবের পাতা উল্টাতেই একটি আরবি বাক্য তার দৃষ্টিতে এলো—
"وَجَعَلْنَا مِنَ الْمَاءِ كُلَّ شَيْءٍ حَيٍّ"
“আর আমি পানি দ্বারা সবকিছু জীবন্ত করেছি।” (সূরা আম্বিয়া: ৩০)
এই আয়াতের অর্থ কী? এটা কেন তার সামনে এল? হাসানের মনে হলো, এই রহস্যের উত্তর তার খুঁজে বের করতেই হবে।
কিন্তু পরীদের অস্তিত্ব কি আসলেই আছে? নাকি শয়তান তাকে ভুল পথে নিয়ে যেতে চাইছে?
এই চিন্তা নিয়েই হাসান আবারো জানালার বাইরে তাকাল। চাঁদের আলোয় তাকে মনে হলো, দূরে বাগানের এক কোণায় একটা ছায়ামূর্তি যেন অদৃশ্য হয়ে গেল।
(পরবর্তী পর্ব: রহস্যের জট খুলতে শুরু করে)
লেখক: মাওলানা মুহাম্মদ সাকিব
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। অনুগ্রহ করে শালীন ভাষায় কমেন্ট করুন।"