উপন্যাস: পরীর ছোঁয়া
পর্ব ৬: রহস্যময় সীমানার ওপারে
হাসানের বুক ধুকপুক করছিল। সামনে অন্ধকারে ছায়ার মতো কিছু একটা নড়ে উঠল। সে চেয়ে দেখল, ধোঁয়ার মতো আবছা এক অবয়ব ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে।
কণ্ঠস্বর এল, কোমল, কিন্তু গভীর—
"তুমি কি সত্যিই আমাদের কাছে আসতে চাও?"
হাসান অনুভব করল, তার পায়ের নিচের মাটি যেন একটু একটু করে মিলিয়ে যাচ্ছে। সে কোনো সুনির্দিষ্ট স্থানে নেই, অথচ পড়েও যাচ্ছে না।
তার চারপাশে আলো-আঁধারির খেলা। যেন রাতের আকাশে তারার ঝিলমিল, কিন্তু তার মধ্যে কিছু একটা অস্বাভাবিক।
অজানা জগতের প্রথম স্পর্শ
সে এক ঝটকায় নিজেকে সামলে নিল। "তুমি কে?" হাসান জিজ্ঞেস করল।
অবয়বটি আরেকটু স্পষ্ট হলো। এখন সেটিকে স্পষ্টতই একটি মেয়ের রূপে দেখা যাচ্ছে—কিন্তু স্বাভাবিক মানুষের মতো নয়।
তার চোখ দুটো গভীর সমুদ্রের মতো, চুলগুলো মৃদু বাতাসে উড়ছে, আর তার চারপাশে এক অদ্ভুত আভা।
"আমি "নূরসাবা মেয়েটি বলল। "তুমি আমাদের পৃথিবীর দোরগোড়ায় চলে এসেছ।"
হাসান কেঁপে উঠল। "তোমাদের পৃথিবী?"
নূরসাবা হেসে বলল, "তুমি কি কখনো শুনেছ, কিছু মানুষ দুটি জগতের সীমানায় দাঁড়াতে পারে?"
হাসান মনে মনে কুরআনের সেই আয়াতের কথা ভাবল—
"وَخَلَقْنَا ٱلْإِنسَٰنَ مِن صَلْصَٰلٍۢ مِّنْ حَمَإٍۢ مَّسْنُونٍۢ وَٱلْجَآنَّ خَلَقْنَٰهُ مِن قَبْلُ مِن نَّارِ ٱلسَّمُومِ"
"আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি পোড়ামাটির মতো শুকনো কাদা থেকে, আর জিনকে সৃষ্টি করেছি আগুনের শিখা থেকে।" (সূরা আল-হিজর: ২৬-২৭)
"তাহলে…তুমি কি জিন?" হাসান জিজ্ঞেস করল।
নূরসাবা কিছু বলল না, শুধু এক পা সামনে এগিয়ে এলো। হাসান অনুভব করল, তার শরীর হালকা হয়ে যাচ্ছে, যেন সে ধীরে ধীরে অন্য কোথাও প্রবেশ করছে।
অন্য দুনিয়ার দ্বারপ্রান্তে
চারপাশের দৃশ্য বদলে যেতে লাগল। মাটি, আকাশ, বাতাস—সবকিছু যেন ভিন্ন রূপ নিতে শুরু করল।
"এটি কেবল শুরু," নূরসাবা বলল।
হাসান বুঝতে পারল, সে এক নতুন বাস্তবতার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু এটি কি রহস্য উন্মোচনের পথ, নাকি এক অজানা বিপদে জড়িয়ে পড়ার শুরু?
লেখক: মাওলানা মোঃ সাকিব
(পরবর্তী পর্ব: হাসানের সামনে উন্মোচিত হয় পরীদের রাজ্য)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। অনুগ্রহ করে শালীন ভাষায় কমেন্ট করুন।"