পরীর ছোঁয়া (৪৪ তম খণ্ড)
![]() | ||
|
নতুন পথচলা
যুদ্ধ শেষ হয়েছে, শত্রুরা পালিয়ে গেছে, কিন্তু হাসানের মন অশান্ত। বিজয়ের আনন্দের মাঝেও তার মনে একটাই প্রশ্ন—“এখন কী?”
গ্রামপ্রধান শওকত হোসেন তার দিকে তাকিয়ে বললেন, “সত্যের বিজয় অর্জন করা যেমন কঠিন, তা ধরে রাখা আরও কঠিন। তুমি কি প্রস্তুত?”
হাসান মাথা নাড়ল। “আমাদের সমাজে শিক্ষার আলো ছড়াতে হবে, মানুষকে ন্যায়ের পথে আনতে হবে। কেবল যুদ্ধ করলেই চলবে না, বরং ভালোবাসা ও জ্ঞানের মাধ্যমে সত্যের পথে ধরে রাখতে হবে।”
নতুন নেতৃত্বের সূচনা
গ্রামের সবাই জড়ো হলো।
জাবের বলল, “আমাদের একতাবদ্ধ থাকতে হবে, যেন শত্রুরা আর কখনো ফিরে আসতে না পারে।”
সুফিয়ান বলল, “আমাদের একটি পরিষদ গঠন করা উচিত, যারা গ্রামের নিরাপত্তা, শিক্ষা ও ন্যায়বিচারের দায়িত্ব নেবে।”
হাসান বলল, “হ্যাঁ, আমরা একটি দল তৈরি করব, যারা গ্রামকে সঠিক পথে পরিচালিত করবে। আল্লাহ আমাদের সাহায্য করবেন।”
গ্রামের মানুষেরা উচ্ছ্বসিত হয়ে তাকবির দিল—
“আল্লাহু আকবার!”
পরী নূরসাবা ও হাসানের ভবিষ্যৎ
পরী নূরসাবা দূর থেকে সব দেখছিল। হাসানের প্রতি তার শ্রদ্ধা আরও বেড়ে গেল। সে ভাবল, “হাসান শুধু একজন যোদ্ধা নয়, সে একজন প্রকৃত নেতা।”
এক রাতে হাসান ও পরী নূরসাবার মধ্যে কথা হলো।
পরী নূরসাবা বলল, “তুমি কি চিরকাল যুদ্ধের জীবনই বেছে নেবে? নাকি এখন থেকে কিছুটা শান্তির পথ ধরবে?”
হাসান হেসে বলল, “যুদ্ধ তো কেবল শত্রুর বিরুদ্ধে নয়, নিজের নফসের বিরুদ্ধেও করতে হয়। এখন আমাদের কাজ হবে মানুষের অন্তরে সত্যের আলো পৌঁছে দেওয়া।”
পরী নূরসাবা তাকিয়ে থাকল। তার হৃদয় প্রশান্তিতে ভরে গেল।
একটি নতুন অধ্যায়ের শুরু
গ্রামের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পর হাসান ও তার দল শিক্ষার প্রসার ঘটাতে শুরু করল। শিশুদের কুরআন শিক্ষা দেওয়া হলো, বড়দের হালাল-হারাম সম্পর্কে জানানো হলো।
কিন্তু ঠিক তখনই...
এক আগন্তুক গ্রামে প্রবেশ করল। তার চোখ ছিল বিদ্বেষে ভরা।
সে বলল, “তোমরা সত্যের পথে আছো? তবে নতুন এক পরীক্ষা আসছে!”
গ্রামের মানুষ হতবাক হয়ে গেল। নতুন কী বিপদ আসছে?
@@@
নতুন সংকট
গ্রামে এক অজানা আগন্তুক প্রবেশ করেছিল। তার চোখে বিদ্বেষের আগুন, কণ্ঠস্বর ছিল রহস্যময়।
“তোমরা সত্যের পথে আছো? তবে নতুন এক পরীক্ষা আসছে!”
হাসান এগিয়ে গিয়ে বলল, “তুমি কে? কী চাও?”
লোকটি হাসল, এক অদ্ভুত রহস্যময় হাসি। “আমি সেই মানুষ, যে অন্ধকারে থেকেও আলোর সন্ধান করেছে। কিন্তু তোমাদের আলো কি সত্যিই সব অন্ধকার দূর করতে পারবে?”
হাসান তার কথা শুনে সতর্ক হলো। সে বুঝতে পারল, নতুন এক বিপদ ধেয়ে আসছে।
বিশ্বাসের পরীক্ষা
সেদিন রাতেই গ্রামের চারদিকে ছায়াময় কিছু লোক দেখা গেল। তারা ধীরে ধীরে একত্রিত হচ্ছিল। হাসান ও তার দল দ্রুত প্রস্তুতি নিল।
“আল্লাহ আমাদের সাহায্য করবেন,” হাসান বলল।
পরী নূরসাবা তার পাশে এসে দাঁড়াল। “তুমি কি মনে করো, আমরা সব অশুভ শক্তিকে পরাজিত করতে পারব?”
হাসান বলল, “সত্যের পথ কখনো সহজ নয়, তবে আল্লাহর উপর ভরসা রাখলে আমরা সফল হবই।”
চূড়ান্ত লড়াই
শত্রুরা আক্রমণ করল, কিন্তু এবার হাসান ও তার দল পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল। তারা শুধু অস্ত্রের শক্তিতেই নয়, বরং ন্যায় ও জ্ঞানের শক্তিতেও লড়াই করল। শত্রুরা ধীরে ধীরে পরাস্ত হলো।
শত্রুদের নেতা বলল, “তোমাদের এই একতা, তোমাদের এই ঈমান আমাদের হারিয়ে দিল।”
হাসান বলল, “সত্যের পথে যারা থাকে, তারা কখনো হারবে না।”
এক নতুন সূচনা
যুদ্ধ শেষ হলো। গ্রাম আবার শান্ত হলো।
জাবের বলল, “এখন আমরা কী করব?”
হাসান বলল, “এখন আমাদের কাজ হলো মানুষের অন্তরে সত্যের আলো পৌঁছে দেওয়া। সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা।”
পরী নূরসাবা বলল, “তাহলে কি আমাদের গল্প এখানেই শেষ?”
হাসান হেসে বলল, “না, পরী। সত্যের পথ কখনো শেষ হয় না। এটা শুধু এক নতুন সূচনা।”
শেষ কথা
হাসান ও তার সঙ্গীরা সত্য ও ন্যায়ের পথে চলতে থাকল। তারা নতুন প্রজন্মকে ইসলামের সঠিক শিক্ষা দিতে লাগল।
পরী নূরসাবার হৃদয় প্রশান্তিতে ভরে গেল। সে বুঝতে পারল, সত্যের আলো সব অন্ধকার দূর করতে পারে, যদি কেউ সত্যিকারের বিশ্বাস রাখে।
(শেষ)
লেখক মাওলানা মোঃ সাকিব।
আলহামদুলিল্লাহ ভালো লাগে
উত্তরমুছুন