GDPR সম্মতি

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করার জন্য আমরা কুকি এবং আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করি। আপনার সম্মতি থাকলে আমরা এই তথ্যগুলি সংগ্রহ করতে পারি। আপনি চাইলে আপনার সম্মতি দিতে পারেন অথবা নীচের পছন্দগুলি পরিবর্তন করতে পারেন। সম্মতি দিন | পছন্দ পরিবর্তন করুন

বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০২৫

পরীর ছোঁয়া পর্ব ৩৬: নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা - হাসানের সাহসিকতা এবং শত্রু পরাজয়

 পর্ব ৩৬: নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা

হাসান, শত্রুদের পরাস্ত করে ইসলামের শক্তির মাধ্যমে তাদের জীবন পরিবর্তন করে, এবং এক অমুসলিম মেয়ে ইসলামের দিকে আগ্রহী হয়ে ওঠে।
হাসান, শত্রুদের পরাস্ত করে ইসলামের শক্তির মাধ্যমে তাদের জীবন পরিবর্তন করে, এবং এক অমুসলিম মেয়ে ইসলামের দিকে আগ্রহী হয়ে ওঠে।


(প্রথম অংশ)

রাত গভীর, আকাশে একফালি চাঁদ ঝুলে আছে। ধীর বাতাস বইছে, যেনো কোনো এক অনিবার্য ঘটনার সাক্ষী হতে চলেছে। হাসান সতর্ক দৃষ্টিতে চারপাশ পর্যবেক্ষণ করছে। তার সামনে বিশাল এক অন্ধকার গলি, যেখানে কিছুক্ষণ আগেই এক রহস্যময় ছায়া ঢুকে গেছে।


"এভাবে রাতের বেলায় কারা ঘুরে বেড়ায়?" হাসান নিজেকেই প্রশ্ন করল।


সে ধীর পায়ে এগিয়ে গেল। হঠাৎ তার কানে ভেসে এলো এক নারীর চাপা কান্নার শব্দ। সে তৎক্ষণাৎ থেমে গেল। ধৈর্য ধরে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করল। কণ্ঠস্বরটা আসছে পাশের এক পরিত্যক্ত ভবনের দিক থেকে।


হাসান ধীরে ধীরে সেখানে গিয়ে উঁকি দিল। যা দেখল, তা তার হৃদয়কে ক্ষোভে জ্বালিয়ে দিল!


একদল নষ্ট চরিত্রের লোক, তাদের মধ্যে কয়েকজন অমুসলিম। তাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে এক তরুণী, চেহারায় ভয় আর আতঙ্কের ছাপ। তার গায়ে এক ঢিলা শাল ছিল, যা দেখে বোঝা যাচ্ছে সে একজন মুসলিম নারী।


"তুমি আমাদের হাত থেকে পালাতে পারবে না!" এক অমুসলিম লোক উচ্চস্বরে বলল।


"আল্লাহ আমাকে রক্ষা করবেন!" মেয়েটি দৃঢ় কণ্ঠে বলল।


হাসানের রক্ত টগবগ করে উঠল। সে ধৈর্য হারাল না, কারণ এখনো সঠিক সময় আসেনি। সে দ্রুত একদিকে সরে গিয়ে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করল। শত্রুরা সংখ্যায় বেশি, কিন্তু তাদের মধ্যে শৃঙ্খলা নেই। এটাই হাসানের সুযোগ!


সে একটা ধাতব রড তুলে নিয়ে ধীরে ধীরে তাদের দিকে এগিয়ে গেল।


"এই কাপুরুষদের বিরুদ্ধে আজ এক নতুন যুদ্ধ হবে," হাসান নিজের মনে বলল, তার চোখে তীব্র দৃঢ়তা ফুটে উঠল।


(চলবে…)


পর্ব ৩৬: নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা


(দ্বিতীয় অংশ)


চারপাশ নিস্তব্ধ, বাতাসের ধীর শোঁ শোঁ শব্দ ছাড়া আর কিছুই শোনা যাচ্ছে না। হাসান শক্ত করে ধাতব রডটি ধরল। ওর চোখে প্রতিশোধের আগুন জ্বলছে, কিন্তু সে ধৈর্য ধরে আছে। বীরত্ব মানেই শুধু লড়াই নয়, কখন কিভাবে আঘাত করা দরকার সেটাও জানা গুরুত্বপূর্ণ।


অপরাধীদের দলটি মেয়েটিকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু মেয়েটির সাহসও কম নয়। সে কাঁপছে ঠিকই, কিন্তু মুখে দৃঢ়তা স্পষ্ট।


“তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় না করো, তাহলে অন্তত মানুষের মতো ব্যবহার করো!” মেয়েটি তীব্র কণ্ঠে বলে উঠল।


“হা হা হা! আল্লাহ? তিনি কোথায়? যদি থাকতেন, তাহলে কি তোমার এই অবস্থা হতো?” এক নাস্তিক লোক ব্যঙ্গ করে বলল।


হাসান আর সহ্য করতে পারল না!


সে লাফিয়ে উঠে রড দিয়ে এক লোকের মাথায় সজোরে আঘাত করল। লোকটা চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। বাকিরা হতভম্ব হয়ে গেল। তারা এত দ্রুত আক্রমণের আশা করেনি!


হাসানের আঘাত ছিল এতটাই প্রচণ্ড যে, মুহূর্তের মধ্যেই আরও দুইজন আতঙ্কে পিছিয়ে গেল। কিন্তু শত্রুরা সংখ্যায় বেশি, এবং তারা এবার প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চাইছে।


"কাপুরুষের মতো পালাচ্ছ কেন? এসো, যদি সত্যিকারের শক্তি থাকে!" হাসান গর্জে উঠল।


একজন লোক ছুরি বের করে হাসানের দিকে ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইল, কিন্তু হাসান দ্রুত পাশ কাটিয়ে তার হাত মুচড়ে দিল। ছুরিটা নিচে পড়ে গেল, আর সে তীব্র ব্যথায় চিৎকার করে উঠল।


এদিকে, মেয়েটি দৌড়ে গিয়ে এক কোনায় দাঁড়াল। সে বুঝতে পারছে, হাসান একাই তাদের সবাইকে সামলাতে পারবে না। কিন্তু তার চোখে একধরনের আশার আলো জ্বলছে— যেন সে প্রথমবারের মতো সত্যিকারের বীরত্ব দেখছে!


“আজ বুঝতে পারবে মুসলমানদের ঈমানের শক্তি কী জিনিস!” হাসান বলে উঠল, তার রক্তগরম হয়ে আছে।


শত্রুরা একে একে চারপাশ থেকে ঘিরতে লাগল। হাসান তাদের চোখে ভয় দেখতে পাচ্ছে, কিন্তু তারা সংখ্যায় বেশি হওয়ায় নিজেদের সাহস বাড়ানোর চেষ্টা করছে।


সে দ্রুত একটা পরিকল্পনা করল। তাকে এই লড়াইয়ে টিকে থাকতে হবে, কারণ এখানে শুধু তার নিজের জীবন নয়, নিরপরাধ একজন মুসলিম নারীর সম্মানও জড়িত।


(চলবে…)


পর্ব ৩৬: নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা


(তৃতীয় অংশ)


চারপাশের বাতাস যেন ভারী হয়ে উঠেছে। নাস্তিকদের দলের বাকি লোকেরা ধীরে ধীরে হাসানকে ঘিরতে শুরু করল। তাদের চোখে ভয় থাকলেও সংখ্যার জোরে তারা হাসানকে দুর্বল করতে চাচ্ছে। কিন্তু হাসানের  চোখে কোনো ভয় নেই। সে জানে, ঈমানের শক্তির কাছে সংখ্যার কোনো মূল্য নেই!


একজন নাপিত চেহারার লোক সামনে এগিয়ে এল, হাতে লোহার রড। সে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বলল, “তুমি একা! আর আমরা পাঁচজন! তুমি কি মনে করছো তুমি আমাদের হারাতে পারবে?”


হাসান হেসে উঠল, তার মুখে আত্মবিশ্বাসের ঝলক।


“একজন মুমিন কখনো একা হয় না! আল্লাহ আমার সঙ্গে আছেন। আর তোমরা? তোমরা কিসের ভরসায় দাঁড়িয়ে আছো?”


লোকটি গর্জে উঠল, “আজ তোকে শেখাবো ঈমান দিয়ে যুদ্ধ হয় না!”


সে সজোরে রড তুলল, কিন্তু হাসান বিদ্যুৎগতিতে পাশ কাটিয়ে এক ঘুষিতে তার চোয়াল ভেঙে দিল! লোকটা ছিটকে গিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল, মুখ থেকে রক্ত ঝরছে!


"কে বলেছে ঈমানের শক্তি নেই?" মাহির গর্জে উঠল।


বাকি লোকেরা একটু পিছিয়ে গেল, কিন্তু তারা একে অপরের দিকে তাকিয়ে চোখের ইশারায় পরিকল্পনা করল। তিনজন একসঙ্গে হাসানের দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ল!


তবে হাসান প্রস্তুত ছিল!


সে নিচু হয়ে এক লাথি মারল সামনের লোকটির হাঁটুতে! লোকটা চিৎকার দিয়ে পড়ে গেল! আরেকজনকে সে ঘুরে দাঁড়িয়ে কনুইয়ের আঘাতে গুঁড়িয়ে দিল। কিন্তু তৃতীয়জন পেছন থেকে তার পিঠে একটা ভারী লোহার পাইপ দিয়ে আঘাত করল!


ধপ!


হাসান সামান্য সামনে হোঁচট খেল, ব্যথায় মুখ বিকৃত হলো। তবে সে মাটিতে পড়ল না। বরং দ্রুত ঘুরে দাঁড়িয়ে তার প্রতিপক্ষের হাতে লেগে থাকা লোহার পাইপ ধরে নিল!


“এটা দিয়ে আমাকে মারতে চেয়েছিলে? এবার আমি দেখাই কীভাবে এটা ব্যবহার করতে হয়!”


সে সেই পাইপ দিয়ে এমন এক আঘাত করল, লোকটা কাতরাতে কাতরাতে মাটিতে পড়ে গেল।


এদিকে মেয়েটি সেই জায়গা থেকে সবকিছু দেখছে, তার মুখে বিস্ময়! সে কখনো ভাবেনি, একা একজন মানুষ এতজনকে সামলাতে পারে!


“এটাই মুসলিমের আত্মবিশ্বাস! এটাই ইসলামের শিক্ষা!” মেয়েটির মনে জেগে উঠল এক নতুন উপলব্ধি।


তবে হাসান জানে, এই লড়াই এখনো শেষ হয়নি। কারণ সবচেয়ে ভয়ঙ্কর লোকটি এখনো সামনে আসেনি।


সে পিছনে তাকিয়ে দেখল—এক লম্বা চওড়া লোক একটা ধারালো ছুরি হাতে সামনে আসছে।


“তুমি সাহসী ঠিকই, কিন্তু আমি এই হাত দিয়েই আজ অনেক মানুষ মেরেছি! আজ তুমি আমার হাতের শিকার হবে!”


হাসান গভীরভাবে তাকাল, তার চোখে কোনো ভয় নেই।


“আমি দেখাবো, ঈমানদারদের হত্যা করা এত সহজ নয়।”


সে তার হাতে থাকা লোহার পাইপ শক্ত করে ধরল। এবার হবে আসল লড়াই!


(চলবে…)


পর্ব ৩৬: নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা

(চতুর্থ অংশ)

চারপাশে নিস্তব্ধতা। বাতাস ভারী হয়ে আছে রক্তের গন্ধে। আহত শত্রুরা কাতরাচ্ছে, কিন্তু সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রতিপক্ষ এখনো অক্ষত। তার হাতে চকচকে ধারালো ছুরি, চোখে আগুন।

“তুমি শক্তিশালী, মানতে হবে!” লোকটি বলল, ছুরিটি হাতে ঘোরাতে ঘোরাতে। “কিন্তু মনে রেখো, এই হাত দিয়ে আমি অনেক মুমিনকে হত্যা করেছি! আজ তুমিও তার ব্যতিক্রম হবে না!”

হাসান সামান্য হাসল।

“যে হাত মুমিনের রক্তে রঞ্জিত, সেই হাত আজ ধ্বংস হবে, ইনশাআল্লাহ!”

লোকটি আর অপেক্ষা করল না। সে বজ্রগতিতে হাসানের দিকে ছুরি চালিয়ে দিল!

স্র্র্ররাশ!

একটুর জন্য এড়াতে পারল হাসান, কিন্তু জামার একপাশ কেটে গেল।

লোকটি আবার আঘাত করল, এবারও হাসান সরে গেল, কিন্তু ঠিক তখনই সে পেছনে থাকা একটি ভাঙা কাঠের বাক্সে ধাক্কা খেল।

এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে শত্রুটি ছুরিটি সজোরে হাসানের বুকে বসাতে চাইল!

কিন্তু হাসান বিদ্যুৎগতিতে তার কব্জি ধরে ফেলল!

“তুমি ভাবছো, ঈমানদাররা সহজে হেরে যায়?”

সে তার সর্বশক্তি দিয়ে লোকটির কব্জি চেপে ধরল!

লোকটি বুঝতে পারল, সে ফেঁসে গেছে।

“না... এতো শক্তি কীভাবে?”

হাসান ধাক্কা দিয়ে লোকটিকে দূরে সরিয়ে দিল। সে ছুরিটি কেড়ে নিয়ে ঘুরিয়ে তার হাতে ধরিয়ে বলল,

“এই ছুরি দিয়ে তুমি মুমিনদের হত্যা করেছো! এবার নিজেই ভোগ করো এর ফল!”

সে দ্রুত ছুরিটি লোকটির হাতে পেঁচিয়ে এমনভাবে চেপে ধরল যে, ছুরির ধারাল অংশ তার নিজের হাতে ঢুকে গেল!

চিৎকার করে উঠল লোকটি!

সে ব্যথায় কাতরাতে কাতরাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। হাসান ধীরে ধীরে তার সামনে দাঁড়িয়ে বলল,

“তাওবা করো! আল্লাহর কাছে ফিরে এসো! না হলে তোমার শাস্তি আরও ভয়ংকর হবে!”

লোকটি ব্যথায় কাঁপতে কাঁপতে মাথা নাড়াল, কিন্তু কিছু বলল না।

ঠিক তখনই সেই অপরিচিত মেয়েটি সামনে এগিয়ে এল।

তার চোখে বিস্ময় আর শ্রদ্ধা।

“তুমি কে? তুমি কি মানুষ, নাকি কোনো ফেরেশতা?”

হাসান তাকিয়ে রইল, তারপর বলল,

“আমি একজন সাধারণ মুসলিম! ইসলাম আমাকে শিখিয়েছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে, দুর্বলের পাশে দাঁড়াতে, এবং সত্যের পথে লড়াই করতে!”

মেয়েটি কিছুক্ষণ চুপ রইল, তারপর ধীরে ধীরে বলল,

“আমি… আমি ইসলাম সম্পর্কে জানতে চাই!”

হাসানের চোখে প্রশান্তির হাসি ফুটে উঠল।

“আলহামদুলিল্লাহ! সত্যের আলো যার কপালে থাকে, সে একদিন না একদিন ঠিকই সে আলো খুঁজে পায়।”

(চলবে…)


---

২টি মন্তব্য:

আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। অনুগ্রহ করে শালীন ভাষায় কমেন্ট করুন।"